মৃত্যুর মুখ থেকে ৬৬৯ শিশুকে বাঁচিয়েছেন তিনি, ৫০ বছর পর তাদের ভালোবাসায় হলেন সিক্ত

তিথি চক্রবর্তী

এপ্রিল ৩, ২০২৪, ০৫:৩০ এএম

মৃত্যুর মুখ থেকে ৬৬৯ শিশুকে  বাঁচিয়েছেন তিনি, ৫০ বছর পর তাদের ভালোবাসায় হলেন সিক্ত

নিকোলাস উইনটন

১৯৮৮ সালে এক অনুষ্ঠানে অতিথি নিকোলাস উইনটনকে জড়িয়ে ধরেন এক নারী। বিস্মিত উইনটন জানতেনই না যে, ৫০ বছর আগে তিনি তাকে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন! এরপর দুজনের চোখেই অশ্রু।

নিকোলাস উইনটন ১৯০৯ সালে জন্ম নেন। ১৯৩৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে তিনি নাৎসী বাহিনী অধ্যুষিত চেকোস্লোভাকিয়াতে যান। প্রাপ্তবয়স্কদের বাঁচাতে না পরলেও তিনি নাৎসিদের হাত থেকে শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ৬৬৯ জন শিশুকে একে একে উদ্ধার করেন। ব্রিটেনে এনে তিনি এই শিশুদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করেন।

তিনি জানতেন না, তাকে আমন্ত্রণ জানানো ওই অনুষ্ঠানে শুধু সেই নারী নন, উপস্থিত সবাই ছিলেন তার বাঁচানো সেই শিশুরা।

সবাই তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোর পর অবাক উইনটন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

তিনি আপসোস করেন, আমেরিকার সাহায্য পেলে আরও অন্তত দুই হাজার শিশুকে বাঁচাতে পারতেন।

নিকোলাস উইনটন ছিলেন একজন ব্রিটিশ স্টক ব্রোকার। তার বাবা-মা ছিলেন জার্মান ইহুদি যারা পরবর্তীতে লন্ডনে চলে আসেন।

উইনটনের অবদান নিয়ে নির্মিত হয়েছে অ্যান্থনি হপকিন্স অভিনীত ‘ওয়ান লাইফ’ ছবি। ছবিটির শিরোনাম ইহুদি আইনের বই তালমুদে’র উক্তি থেকে নেওয়া হয়েছে, ‘যে একটি জীবন বাঁচায় সে সমগ্র বিশ্বকে বাঁচায়’।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাঁকে সংবর্ধনা দেয় এবং ‘ব্রিটিশ শিন্ডলার’ নামে অভিহিত করে। ২০০৩ সালে, উইনটনকে ‘নাৎসী-অধিকৃত চেকোস্লোভাকিয়া থেকে ইহুদি শিশুদের বাঁচাতে’ মানবতার সেবার জন্য রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক নাইট উপাধি দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে, তিনি চেক প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমান কর্তৃক চেক প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ সম্মান , ‘অর্ডার অফ দ্য হোয়াইট লায়ন’ ভূষিত হন ।

২০১৫-এর ১০৬ বছর বয়সে ঘুমের মধ্যেই চলে যান না ফেরার দেশে।

নিকোলাস উইন্টনের মত মানুষ থাকলে পৃথিবী আরও বদলে যেত।

Link copied!