গাজায় ‘টেকসই যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান তিন দেশের

এএফপি

ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৮:৩১ পিএম

গাজায় ‘টেকসই যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান তিন দেশের

ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাটিতে দেখা দিয়েছে এক নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয়। চলমান ইসরায়েলি হামলায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যা দিন দিন বাড়ছেই। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলা ও স্থল অভিযানের লাগাম টেনে ধরতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জোরালো হচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ‘টেকসই যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। যদিও আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করেই হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েল সফররত ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা দুই পক্ষের মধ্যে ‘অবিলম্বে ও স্থায়ী’ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। আজ রোববার তেল আবিবে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ক্যাথরিন বলেন, অনেক বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হচ্ছেন।

গাজায় টেকসই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক। যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমস পত্রিকায় লেখা এক যৌথ নিবন্ধে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সংঘাতে অনেক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান দ্রুত, কিন্তু টেকসইভাবে শেষ করার জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ বেড়েছে। অবশ্য দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথাও লিখেছেন, এখনই তড়িঘড়ি সাধারণ যুদ্ধবিরতিতে সামনের পথ মসৃণ হবে বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন না।

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় একটি প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে দেড় শতাধিক দেশ ভোট দেয়।

তবে আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আজও গাজার উত্তরাঞ্চলে তাদের হামলায় ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে সিএনএন জানিয়েছে। এ ছাড়া মধ্য ও দক্ষিণ গাজায়ও হামলার খবর পাওয়া গেছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের মতো নিহত হয়েছেন। আর প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ওই দিন থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৮ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

বন্দী বিনিময় নিয়ে আলোচনা
গাজায় হামাসের হাতে বন্দী থাকা নিজেদের তিন নাগরিককে ‘ভুল করে’ গুলি চালিয়ে হত্যার পর দেশের ভেতর ভীষণ চাপে পড়েছে ইসরায়েল সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে বন্দী বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরেছে।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান ও ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় নিয়ে বৈঠক হয়েছে। উল্লেখ্য, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ে মধ্যস্থতা করে আসছে কাতার ও মিসর।

শনিবার এক বিবৃতিতে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। একটি সমন্বিত ও টেকসই চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে যুদ্ধ অবসানের প্রত্যাশা করছে কাতার।’

গির্জায় ইসরায়েলি সেনার গুলিতে মা-মেয়ে নিহত
গাজা নগরীর একমাত্র ক্যাথলিক গির্জা প্রাঙ্গণে গতকাল শনিবার এক ইসরায়েলি সেনার গুলিতে দুই নারী নিহত হয়েছেন। তাঁরা খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী ও সম্পর্কে মা-মেয়ে। জেরুজালেমের লাতিন প্যাট্রিয়ার্কের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ন্যাসী মঠের দিকে যাওয়ার সময় নাহিদা ও তাঁর মেয়ে সামারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রথমে একজন গুলিবিদ্ধ হন। অপরজন তাঁকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।

Link copied!