যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেবে ইসরায়েল, আশা যুক্তরাষ্ট্রের

বিবিসি

জুন ৩, ২০২৪, ০৪:১১ এএম

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেবে ইসরায়েল, আশা যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরায়েল রাজি হবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ গত শুক্রবার (৩১ মে) ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী দুই মন্ত্রী পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। এ-অবস্থায় উভয়সংকটে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

এর আগে গত সপ্তাহে তিন-পৃষ্ঠা সংবলিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন। গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানো এবং হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময়ের বিষয়টি প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ওই যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সম্মতি দিলে তিনি সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন বিরোধী দলীয় নেতা জাইর লাপিদ।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়, গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা সরিয়ে নেওয়া হবে। সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময়ের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরায়েল রাজি হবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে বাইডেন এমন সময় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেন যখন রাফাহ শহরে বিমান হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউ বলছে, হামলার মুখে রাফাহ শহরের বাসিন্দাদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। শহরটির ৩৬টি আশ্রয় কেন্দ্রের সবগুলো এখন খালি পড়ে আছে। এছাড়া মধ্য গাজার কিছু অংশ এবং খান ইউনিস শহরের ১৭ লাখ বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

গতকাল রোববার এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, “যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হলে ইসরায়েলও হ্যাঁ বলবে। আমরা এখন শুধু আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।”

হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষই যথাশীঘ্র যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনার প্রথম ধাপ কার্যকরে রাজি হবে বলেও আশা করছেন তিনি। সেই সঙ্গে ছয় সপ্তাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকাকালীন দু’পক্ষই বৈঠকে বসবে। জন কিরবি জানান, “হামাস ও ইসরায়েল দু’পক্ষই বৈঠকে বসবে এবং আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে যে দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি কেমন হবে এবং সেটা কখন কার্যকর করা হবে। আমি মনে করি, এ-দফায় হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা মনে করছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এখন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। সে জন্য গত ৭ অক্টোবরের পুনরাবৃত্তির শক্তি তাদের এখন আর নেই। জন কিরবি বলেন, “আমরা বলছি না, তারা এখন আর ইসরায়েলের জনগণের জন্য হুমকি নয়। অবশ্যই তারা হুমকি। তবে অতীতে তারা যা করেছে, তার সামর্থ্য এখন আর তাদের নেই।”

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে ‘সম্পূর্ণ ও পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি’ বাস্তবায়ন করা হবে। এই সময়ে জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনি বন্দিবিনিময়ের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রাখা হবে।

বাইডেন বলেন, “সত্যিকার অর্থেই এটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। তারা এর শর্তগুলো মানে কিনা সেটা প্রমাণের এটাই সুযোগ।”

যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে ইসরায়েলের জীবিত সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা হবে। আর এর মধ্য দিয়েই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্থায়ী শত্রুতার অবসান হবে।

গত শুক্রবার ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসের প্রতি আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামাসও একে ইতিবাচকভাবে দেখছে বলে জানিয়েছে।

Link copied!