ছবি: সংগৃহীত
‘সন্ত্রাসীদের টার্গেট করে হামলায়’ ভারত সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলের নেতারা।
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বৈঠকে এই সমর্থন জানানো হয়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এই তথ্য জানান ভারতের প্রধান বিরোধ দল ভারতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, কঠিন এই পরিস্থিতিতে দেশের প্রতিটি নাগরিকের একজোট থাকা প্রয়োজন। সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই বার্তা বিরোধী দলগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে উপস্থাপন করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যেরা।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও তাদের অধিকৃত কাশ্মীরের মোট ন’টি জায়গায় হামলা চালায় ভারত। এই সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই অভিযানের খুঁটিনাটি বিরোধী দলগুলোর প্রতিনিধিদের ব্যাখ্যা করা হয় আজকের বৈঠকে।
তবে বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে হওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণসহ মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যেরা।
কংগ্রেসের তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তৃণমূলের তরফ থেকে বৈঠকে যোগ দেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তা ছাড়া ডিএমকের তরফে উপস্থিত ছিলেন টিআর বালু, আম আদমি পার্টির (এএপি) তরফে সঞ্জয় সিংহ, শিবসেনার (উদ্ভব ঠাকরে) তরফে সঞ্জয় রাউত, এনসিপি (এসপি)-র তরফে সুপ্রিয়া সুলে।
এই সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য প্রভাব, যে কোনো পাকিস্তানি হামলার জবাবে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত সকলকে সেনার সাহসিকতার বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
এর আগে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরসহ দেশটির কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশটির অন্তত ৬টি স্থানে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে চালানো এই হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩১ জন। আহত অর্ধশতাধিক মানুষ।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, তারা এসব হামলা চালিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তায়েবা (এলইটি) ও জইশ-ই-মোহাম্মদের (জেইএম) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশটির পাঞ্জাবের ভাওয়ালপুরে জেইএমের ঘাঁটি এবং একই প্রদেশের মুরিদকে শহরে এলইটির আস্তানাসহ নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, ‘ভারতের “কাপুরুষোচিত” হামলার জবাব দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার মাধ্যমে হামলার জবাব দিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।’ পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়ে ভারত ‘ভুল করেছে’ এবং এর জন্য ‘তাদের মূল্য দিতে হবে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।