কেন ভারতীয়রা হঠাৎ লাক্ষাদ্বীপ যেতে চাচ্ছে?

তাবিবুর রহমান

জানুয়ারি ১৭, ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম

কেন ভারতীয়রা হঠাৎ লাক্ষাদ্বীপ যেতে চাচ্ছে?

লাক্ষা দ্বীপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংগৃহীত ছবি

গত বছর নভেম্বরে ক্ষমতায় আসার পর মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মুহম্মদ মুইজ্জু ভারতীয় সেনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাহারের সময়সীমা আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট। 

গত রবিবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানী মালেতে ভারতের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে সৈন্য প্রত্যাহারের এই সময়সীমা বেঁধে দেন তিনি।

মুইজ্জু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতি হয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার পর চীনে পাঁচ দিনের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফেরার পরপরই ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তিনি। 

বিতর্কের সৃষ্টি হয় মালদ্বীপ সরকারের মন্ত্রী মরিয়ম শিয়ুনাসহ আরও দু’জনের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। ভারতের সাধারণ নাগরিক এবং একাধিক বিখ্যাত ব্যক্তি এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।

#বয়কটমালদ্বীপ যেমন ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ট্রেন্ড করছে, তেমনই ট্রেন্ড হয়েছে #এক্সপ্লোরলাক্ষাদ্বীপ-ও।

মালে এবং নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা বলেছেন, এই দ্বীপ দেশটিতে বর্তমানে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ৭৭ জন সদস্য রয়েছেন।

মালদ্বীপের মোট জনসংখ্যা ৫ লাখের কিছু বেশি, যারা চাল, শাকসবজি, ওষুধ এবং মানবিক সহায়তাসহ নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর জন্য নয়াদিল্লির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল গাইয়ুমের বিরুদ্ধে মালদ্বীপে অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়। এ সময় অভ্যুত্থানকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য সেনা পাঠায় ভারত। পরে কিছু দিনের মধ্যে সেই সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয় নয়াদিল্লি।ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা এবং মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নয়াদিল্লির হস্তক্ষেপ দেশটিতে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান মোহাম্মদ মুইজ্জু। তার নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম অঙ্গীকার ছিল ‘‘ভারত হটাও’’। যদিও তার আগের বেশিরভাগ প্রেসিডেন্টই ছিলেন ভারতপন্থী।

মোহাম্মদ মুইজ্জু নয়াদিল্লির ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেছেন এবং মালদ্বীপের মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্যদের তাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এরই প্রতিবাদে ভারতীয়রা মালদ্বীপ না গিয়ে লাক্ষাদ্বীপ যাওয়ার পক্ষপাতী। দক্ষিণ ভারতের কেরালার উপকূলের কাছাকাছি এই দ্বীপে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করেন। মোদি তার পোস্টে মালদ্বীপের কথা উল্লেখ না করলেও অনেকেই ধরে নেন, তিনি ভারতের নাগরিকদের মালদ্বীপে না গিয়ে লাক্ষাদ্বীপে ছুটি কাটাতে যেতে উদ্বুদ্ধ করছেন।

বলিউডের তারকা থেকে শুরু করে ক্রিকেট খেলোয়াড় পর্যন্ত অনেকেই ছুটি কাটানোর জন্য মালদ্বীপের পরিবর্তে ভারতের নিজস্ব গন্তব্যগুলোয় যাওয়ার আহ্বান জানান।

বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার বলেন, ‘মালদ্বীপের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলো বর্ণবাদী ও ঘৃণা প্রকাশকারী।’

Link copied!