তালেবান ক্ষমতা দখলের পরই আগামী মাসখানেকের মধ্যেই আফগানিস্তানে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) এই আশঙ্কার কথা জানালেন জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির বিশেষ দূত রামিজ আলাকবারোভ।
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর ধীরে ধীরে খাদ্য দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। বেতন আটকে গিয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তিন কোটি ৮০ লক্ষ মানুষের দু’বেলা খাবার জোটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আলাকবারোভ জানিয়েছেন, সামনেই শীত আসছে। আবহাওয়া প্রতিকূল হবে আরও। অন্য দিকে এই বছর বেশ কয়েকটি আফগান প্রদেশে খরা হয়েছে। সাধারণ মানুষের হাতে অর্থ নেই বললেই চলে, এর ফলেই তৈরি হতে পারে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি।
গত এক সপ্তাহে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৩ কোটির বেশি মানুষের এই সাহায্য প্রয়োজন। শেষ সপ্তাহের ১০ হাজারের হিসাব ধরে মোটে ৩৯ শতাংশ মানুষের কাছে এখনও পৌঁছতে পেরেছেন জাতিসংঘের খাদ্য প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মকর্তাদের।
আলাকবারোভ আরও বলেছেন, ‘‘শীতের আগে যদি যথেষ্ট পরিমাণ আর্থিক সাহায্য এসে না পৌঁছয়, তা হলে সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার আগেই খাদ্য ভান্ডার শূন্য হয়ে যাবে।’’
তার মতে, তালেবান ক্ষমতা দখল করেছে ঠিকই, কিন্তু সরকার অস্ত্রের জোরে চলবে না, তার জন্য নীতি তৈরি করতে হবে। মনে রাখতে হবে আফগানিস্তান মূলত বিদেশের অর্থ সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। তা ছাড়া এখন সে দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছেই। এর মধ্যে তৈরি হয়েছে খাদ্যসঙ্কট। এই সব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে নতুন শাসকদের।
আফগানিস্তানের বাজারে রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদিন বিপুল পরিবর্তন হচ্ছে আফগান মুদ্রার দাম। এখনই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরবর্তী কালে সাধারণ মানুষের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই হাতে বেশি সময় নেই, এখনই যা করার করতে হবে।