ইউক্রেনের নাগরিকদের গণহারে রুশ নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে একটি ডিক্রি জারি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নতুন ডিক্রির ফলে সব ইউক্রেনীয় রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাবেন। সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিনের জারিকৃত ওই ডিক্রির একটি কপি এরই মধ্যে রাশিয়ার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। এতে ইউক্রেনীয় জনগণের রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার কথা বলা হয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্টের জারি করা ওই ডিক্রিতে ইউক্রেনের সব নাগরিককে রাশিয়ার নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করার শর্তাবলি সহজ ও শিথিল করা হয়েছে। আগে, রুশ নাগরিকত্ব পেতে হলে রাশিয়ায় অন্ত পাঁচ বছর অবস্থান করার পাশাপাশি রুশ ভাষা জানার বাধ্যবাধকতা ছিল। পুতিনের জারি করার নতুন ডিক্রিতে এখন আর কাউকে রাশিয়ায় পাঁচ বছর অবস্থান করার মতো শর্ত পূরণ করতে হবে না। আবেদনকারীকে রুশ ভাষা জানার শর্তও শিথিল করা হয়েছে।
এর আগে, ইউক্রেনের রুশপন্থী অঞ্চল দোনেৎস্ক, লুহানেস্ক এবং ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল খেরসন ও জাপোরিঝজিয়ার বাস করা সাধারণ মানুষদের জন্য রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি সহজ করে দিয়ে ডিক্রি জারি করেছিলেন পুতিন।এবারের ডিক্রিতে পুরো ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্যই বিষয়টি সহজ করে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
রুশ হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের প্রতিহতের ডাক ও পাল্টা আক্রমণের নৈতিক অবস্থান দুর্বল করতে এমন সহজ নাগরিকত্বের টোপ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করা নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় মস্কো-কিয়েভের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো।
তবে ওই কৌশল কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এর দুদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে।