কথায় বলে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’। এই প্রবাদটি যেন সত্যি করতেই ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট গড়েছিলেন পীরজাদা আব্বাস সিাদ্দকী।
তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী আরও যে একটি শক্তি আছে, এ বারের নির্বাচনী প্রচারণায় ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)’-এর প্রধান আব্বাস সিদ্দিকী সে কথা ভালো করেই বুঝিয়েছিলেন সবাইকে।
তৃণমূলের মুসলিম ভোটে ভাঙন ধরাতে এ বার কিছুটা যেন হঠাৎই কংগ্রেস ও বামপন্থীদের বন্ধু হয়ে ওঠেন আব্বাস। অথবা তাকেই বন্ধু বানিয়ে ফেলেন বামপন্থীদল ও কংগ্রেস! আব্বাস নিজের দলও গড়ে ফেলেন এ বছরের গোড়ায়।
তার পর থেকেই প্রচারের আলো কেড়ে নিতে তার তৎপরতা অনেকেরই নজরে পড়তে শুরু করে। সংযুক্ত মোর্চার দুই বড় শরিক বামপন্থী দলগুলি ও কংগ্রেসকে অবাক করে দিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি বামফ্রন্টের ব্রিগেড সমাবেশে প্রচারের আলো কেড়ে নিয়েছিলেন আব্বাস। মঞ্চে গরম বক্তৃতা দিয়ে আর তার বিশাল সংখ্যক অনুগামীদের নিয়ে ব্রিগেডের সভায় পৌঁছে সকলের বাহ্বা কুড়ায় আব্বাস। মঞ্চে তার ভাষণের সময় কিছুটা বিব্রত বোধ করতেও দেখা গিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে।
ফল ঘোষণার দিন আরও বেশি প্রচারের আলো কেড়ে নিলেন আব্বাস। তুলনামূলকভাবে বেশি পরিচিত তৃণমূল এবং বিজেপি প্রার্থীদের টেক্কা দিয়ে ভাঙড় আসন থেকে তার দলের প্রার্থী ও তার ভাই নওশাদ সিদ্দিকি এবারের নির্বাচনে জিতে গেছে।
এবারের পশ্চিমবঙ্গের বিথধানসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হিসাবে লোকসান হয়েছে কংগ্রেস ও বামপন্থীদের। হারানো মুসলিম ভোট তারা ফিরে তো পায়ই নি বরং প্রতিবারের বাম সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনগুলোতেও এবার তৃণমূলের জয়জয়াকার।
শুধুমাত্র একুশের ভোট-লড়াইয়ে বামপন্থী ও কংগ্রেসের শরিক হয়ে আব্বাস সিদ্দিক প্রচারের আলোয় এসে ভাঙড়ে বাজিমাত করলেন।