তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্প: তীব্র ঠান্ডায় ব্যাহত উদ্ধারকাজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৩:০৩ পিএম

তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্প: তীব্র ঠান্ডায় ব্যাহত উদ্ধারকাজ

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজারে। দেশ দুটিতে মৃত্যুর তালিকা কেবল বড় হচ্ছে। এদিকে তীব্র ঠান্ডায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ বিতরণ।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) উদ্ধার কার্যক্রম চালানো একটি দাতব্য সংস্থার কর্মকর্তার বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ts3

দক্ষিণ তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহর থেকে দাতব্য সংস্থার ওই কর্মকর্তা জানান, ‘বৈরী আবহাওয়ায় যানবাহন নির্দিষ্ট এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না। এ ধরনের একটি দুর্ঘটনার পর ‘সর্বদা বিশৃঙ্খলা’ দেখা দিয়ে থাকে। কিন্তু বিষয়গুলো ধীরে ধীরে আরও উন্নতি হবে। স্থানীয় মানুষ, সরকার, পুলিশ, মিলিটারি, এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবকেরা কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এগিয়ে আসছে। ধীরে ধীরে বিষয়গুলোর উন্নতি হবে।

Turkey Syria 8-1

ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাওয়া দেশটিতে এখন ক্ষুধা ও তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষজন। হাতেই প্রদেশের এক বাসিন্দা (৬৪) বলেন, ‘আমি ভূমিকম্পে প্রাণে বেঁচে গেছি। কিন্তু আমরা এখানে এখন ঠান্ডা ও ক্ষুধার কারণে মারা যাব।’ 

ts17

এদিকে, উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চালালেও যতটা গতি ও লোকবল প্রয়োজন সে অনুযায়ী সরবরাহ অপ্রতুল। নিখোঁজদের পরিবার অভিযোগ করছে, প্রয়োজনীয় সাহায্যের অভাবে পরিবারের নিখোঁজ সদস্যদের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে খুঁজে বের করতে পারছেন না তারা। ধীরগতিতে উদ্ধার কাজ চলছে। সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে এবং এ কারণেই ভূমিকম্পে এত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এদিকে উদ্ধারকারীরাও বলছেন, যারা আটকে পড়ে আছে তাদের জীবিত পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে।

ts20

বিবিসির প্রতিবেদককে দক্ষিণ তুরস্কের ইস্কেন্দেরুনের আরজু দেদেওগ্লু নামের এক নারী বলেন, ‘আমার ভাইয়ের দুই মেয়ে আয়েসেগুল এবং ইলায়দা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা আছে। একদিন পার হলেও কোনো উদ্ধারকর্মী আসেননি। আমি নিশ্চিত, দুই বুকের মানিক আর বেঁচে নেই। উদ্ধারকর্মীরা কেন আগে এল না?’

ts30

তুরস্কের পূর্ব আনাতোলিয়া অঞ্চলের শহর মালত্যার বাসিন্দা মুরাত আলিনাক বলেন, ‘সাহায্যের জন্য একজনও নেই। আমরা বরফের মধ্যে। গৃহহীন; বলতে গেলে কিছুই নেই। আমি কী করব। কোথায় যাব?’ 

ts29

দেশবাসীর ক্ষোভ ও সমালোচনার মুখোমুখি হয়ে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কাহরামানমারাস প্রদেশে ত্রাণ তৎপরতা দেখতে সফর করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কপথ ও বিমানবন্দরকে দায়ী করেন। 

Turkey Syria 5

অন্যদিকে তুরস্কের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান উদ্ধার কার্যক্রমের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, এমন জায়গা নেই যেখান উদ্ধারকারীরা যেতে পারবেন না। 

ts23

উল্লেখ্য, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৭তে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর ১১ মিনিট পরই আঘাত হানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প। তুরস্ক-সিরিয়া ছাড়াও এসব ভূমিকম্প পাশের সাইপ্রাস ও লেবাননেও অনুভূত হয়। দুটি দেশ পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে।

Link copied!