ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ১১:০৫ পিএম
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে নতুন বছরকে বরণ করার আনন্দ বিশ্বজুড়েই সীমিত ছিল। ২০২২ শেষে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকায় অনেক বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। এই সুযোগে ভৌগোলিক অবস্থান ভেদে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলো বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ করছে। দূষণ কমাতে অনেক দেশেই আতশবাজির পরিবর্তে রাখা হয়েছে লেজার শোর ব্যবস্থা।
নিউজিল্যান্ড
সবার আগে ইংরেজি নতুন বছর ২০২৩ সালকে বরণ করলো নিউজিল্যান্ড। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সবার আগে দেশটিতে ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁয়েছে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় নিউজিল্যান্ডে নতুন বছর শুরু হয়েছে। টানা ৫ মিনিট আতশবাজি প্রদর্শনের মাধ্যমে ২০২৩ সালকে স্বাগত জানানো হয়।
করোনা মহামারির কারণে গত বছর নতুন বছর উদযাপন আয়োজনে ভাটা পড়লেও এ বছর অকল্যান্ড হারবার ব্রিজ এবং স্কাই টাওয়ারে লাইট শো ও আতশবাজি প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ বরণ করা হয়।
নতুন বছরের প্রথম প্রহরে আলোর খেলা চলে অকল্যান্ডে। বর্ণিল আতশবাজির আলোকচ্ছটায় শোভিত হয় অকল্যান্ডের আকাশ।
অস্ট্রেলিয়া
নতুন বছর বরণের সবচেয়ে বড় ও জমকালো উৎসব করেছে অস্ট্রেলিয়া। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ চোখ ধাঁধানো আয়োজনটি হয় সিডনি হারবারে।
অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় ১ জানুয়ারি রাত ১২টায় খ্রিস্টীয় নতুন বছর বরণ শুরু হয়। মধ্যরাতে সিডনির হারবার ব্রিজ ও অপেরা হাউস থেকে টানা ১০ মিনিট একের পর এক আতশবাজির ঝলকানি দেখা যায়। এসময় রঙিন আলোর ঝলকানিতে ভরে যায় পুরো শহর।
একই দৃশ্য দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ও ব্রিজবেনে। সব জায়গায় উৎসবমুখর পরিবেশে আনন্দের মধ্য দিয়ে খ্রিস্টীয় নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
সংযুক্ত আরব আমিরাত
দেশটিতে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে দর্শনীয় আতশবাজি, ড্রোন প্রদর্শনী এবং নানা ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রাখা হবে। নববর্ষ উদযাপনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি এবার বিশ্বের তিনটি গিনেস রেকর্ড ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছে।
নতুন বছর উদযাপনে ‘লোকজ এবং বিনোদনমূলক’ অনুষ্ঠানসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ৩ হাজার ড্রোন ব্যবহার করে দীর্ঘ ৪০ মিনিট আতশবাজি প্রদর্শনী করা হবে। ড্রোনগুলো আল ওয়াথবা এবং দুবাই শহরের আকাশ আলোকিত করবে। এছাড়া এবারের নববর্ষে শিশুদের জন্য নাটক, সার্কাস উপভোগ এবং বিভিন্ন গেম খেলার সুযোগ থাকবে।
ব্যাংকক
এশিয়ায় রাতের সৌন্দর্য উপভোগ্য এমন শহরের তালিকায় ওপরের সারিতে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের নাম। ব্যাংককের ‘টাইমস স্কয়ার’ সেন্ট্রাল ওয়ার্ল্ড প্লাজায় থার্টিফার্স্ট নাইটে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। আরেকটি জনপ্রিয় স্থান চাও ফ্রাইয়া নদীর তীরে আতশবাজির আয়োজন হয়।
ব্রাজিল
ব্রাজিলের রিও ডি জানেইরোতে উষ্ণ আবহাওয়ায় সৈকতঘেঁষা রিসোর্টে প্রায় ২০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বর্ষবরণে। ব্রাজিলে সবচেয়ে বেশি জনসমাগম হয় কোপাকাবানা সৈকতে। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানোর পাশাপাশি থাকবে আতশবাজির প্রদর্শনী। এছাড়া জোবি বার ও চীনা বুদ্ধ মন্দির ভিস্তা চিনেসা থেকেও দেখা যাবে বর্ষবরণের আয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের উৎসবের প্রাণকেন্দ্র নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী বল ড্রপ আয়োজিত হবে। এছাড়া ব্রুকলিনের প্রসপেক্ট পার্কে অবস্থিত গ্র্যান্ড আর্মি প্লাজায় আতশবাজির আয়োজন করা হবে। জেএফকে বিমানবন্দরের কাছে এই স্থানকে বলা যায় ইংরেজি নববর্ষের পার্টির প্রাণকেন্দ্র।
সারাবছর আলোকসজ্জায় সেজে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা রাজ্যের লাস ভেগাস শহরে থার্টিফার্স্ট নাইটে রাস্তায় যানবাহনের চলাচল প্রায় বন্ধই থাকে। পথচারীরা উৎসব দেখতে হাঁটতে বেরিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে বিভিন্ন ক্যাসিনো আতশবাজি প্রদর্শন করে। স্ট্রাটসফেয়ার টাওয়ার থেকে এই দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
সবার শেষে ২০২৩ সাল শুরু করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় দ্বীপগুলো। বেকার আইল্যান্ড ও হাউল্যান্ড আইল্যান্ডের মত জনবসতিহীন দ্বীপগুলোতে যখন নতুন বছরের প্রথম ক্ষণ শুরু হবে – তখন গ্রীনিচ মান সময় হবে রোববার দুপুর বারোটা।