বিশ্ব জুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়াল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুন ১৮, ২০২১, ০৪:২৯ পিএম

বিশ্ব জুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়াল

বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসে মৃতর সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানালো রয়টার্স। কোভিড১৯ প্রতিরোধে টিকা সরবরাহ ব্যবস্থা এখনো প্রস্তুত হয়নি। উন্নত দেশগুলো ছাড়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বর্তমানে করোনার টিকা সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। আর সে কারণেই বিশ্ব জুড়ে এখনো অনিয়ন্ত্রিত করোনা ভাইরাস।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মত দেশগুলোতে করোনায় নতুন আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশে আবারও শুরু হয়েছে করোনার নতুন ঢেউ। মূলত ডেল্টা ভেরিয়েন্টের প্রভাবে আবারও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাসটি।

অবশ্য বিশ্ব জুড়ে করোনায় মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। কেননা ভাইরাস প্রথম মানবদেহে শনাক্তের পর প্রথম ২০ লাখ মৃত্যু হয় মাত্র ১৬৬ দিনে। কিন্তু পরবর্তী ২০ লাখ মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ বছরে। মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে এখনো রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল। এরপরই রয়েছে প্রতিবেশী ভারত এবং রাশিয়া ও মেক্সিকো। মোট মৃত্যুর ৫০ ভাগই হয়েছে এই ৫টি দেশে। অন্যদিকে জনসংখ্যার তুলনায় মৃত্যু বেশি হয়েছে পেরু, হাঙ্গেরি, বসনিয়া, চেজ রিপাবলিক এবং জিব্রাল্টারে।

রয়টার্সের বিশ্লেষণ অনুসারে করোনায় চলতি বছর সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত লাতিন আমেরিকার দেশগুলো। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্বের প্রতি ১০০ আক্রান্তের ৪৩ জন ছিল এই অঞ্চল থেকে। মাথাপিছু মৃত্যুর হারে শীর্ষে রয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দেশগুলো।

বলিভিয়া, চিলি এবং উরুগুয়েতে ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রচুর রোগী শনাক্ত হচ্ছে যা যুবকদের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে প্রমাণ করে। ব্রাজিলের হাসপাতালগুলোতে ৮০ ভাগ নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) করোনা রোগীতে পরিপূর্ণ।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মৃত দেহ সৎকার নিয়ে তৈরি হয়েছে সমস্যা। অধিকাংশ দেশেই সারিবদ্ধ নতুন কবর রয়েছে। ভারত এবং ব্রাজিলে এখনো প্রতি সপ্তাহে বড় সংখ্যায় করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবর মিলছে। সেই সঙ্গে এই দুটি স্থানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য পর্যাপ্ত স্থানেরও অভাব তৈরি হয়েছে। বিবিসি'র এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতে নদীর তীরে অনেকের লাশ ফেলে রাখা হচ্ছে।

বিশ্বের অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, করোনায় মৃত্যুর যেই সংখ্যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদনে জানানো হচ্ছে, আসল মৃত্যুর সংখ্যা তার চাইতে অনেক বেশি। কেননা অনেক দেশ থেকেই সঠিক মৃত্যুর সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অনেক দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরও পূর্বে পরীক্ষা না করায় মৃত্যুর পর নতুন করে আর পরীক্ষা করা হচ্ছে না।

বিশ্ব যখন করোনার টিকা সংগ্রহের জন্য হাহাকার করছে এবং চাহিদা রয়েছে কয়েক'শ কোটি টিকার তখন ধনী রাষ্ট্রদের জোট গ্রুপ অব সেভেন (জি৭) তাদের সম্মেলনে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর জন্য ১০ লাখ কোভিড১৯ টিকা বিনামূল্যে প্রদানের ঘোষণা দেয়। এ ছাড়াও স্বল্প মূল্যে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা সরবরাহের ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সেই সঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য ধনী রাষ্ট্রের প্রধানদের নিজ নিজ রাষ্ট্রে উৎপাদিত টিকা স্বল্পমূল্যে সরবরাহের আহ্বান জানান তিনি।

সূত্র: রয়টার্স ও বিবিসি

Link copied!