গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সুদান। গত সপ্তাহে অভ্যুত্থানচেষ্টার পরই রাস্তায় নেমে আসেন সুদানের জনগন। অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে বন্ধ করে দেন ট্রেন-বাস সহ গণপরিবহন চলাচল।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে বিক্ষোভ করেন কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ। তাদের বেশিরভাগই এসেছেন খার্তুমের বাইরে থেকে। দিনভর সরকার বিরোধী স্লোগানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথগুলো আটকে রাখেন ক্ষুব্ধ সুদানিরা। তাদের একটাই দাবি, বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক সুদানে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক সুদানি বলেন, বেসামরিক প্রশাসনের কাছে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতেই এ বিক্ষোভ। স্বৈরশাসক বশিরের পদত্যাগ, একনায়কতন্ত্র আর সেনা শাসনের অবসান ঘটাতে ২০১৮ সালেও আমরা পথে নেমেছিলাম। ফলাফল শূন্য। যে বিপ্লবীরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না। বর্তমান সরকারের শাসন ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। ক্ষমতা বণ্টনের এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ সুদানিরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিনই জাতিসংঘ আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ্ হামদক। তিনি জানান, সুদানে গণতান্ত্রিক চর্চা ফেরাতে চলছে জোরালো তৎপরতা। ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া গোছালো নয়। কখনোই সহজ ও সোজা পথে এগোচ্ছে না সরকারের অংশীদাররা। তার ওপর নস্যাৎ করতে হচ্ছে অভ্যুত্থান চেষ্টা। এ পরিস্থিতিতেও জাতীয় পরিষদ, সাংবিধানিক কাঠামো এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সুদানিদের বুঝতে হবে ৩০ বছর ধরে চলমান এই প্রথা রাতারাতি পরিবর্তন কষ্টসাধ্য।
এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গণজাগরণ বা কূটনৈতিক তৎপরতা চললেও এতো সহজে ক্ষমতা ছাড়বে না হামদক সরকার। ইয়াসির মারঘানি নামে সুদানের এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, সুদানিরা গণতান্ত্রিক চর্চা দেখতে চাইছেন। বেসামরিক শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠা ছাড়াও পার্লামেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, সাংবিধানিক আদালতের পরিবর্তন চান তারা। কিন্তু বিষয়টি এতোটা সহজ হবে না। কারণ, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাও টলাতে পারছে না সেনাশাসনকে।
২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে হটানোর দাবিতে দীর্ঘ চার মাস ধরে ছিলো বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। সেসময়ই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানের ক্ষমতা নেয় সেনাবাহিনী। বর্তমানে সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্বের যৌথ সরকার পরিচালিত হচ্ছে সুদানে।
সূত্র: রয়টার্স।