রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গোলাগুলির মধ্যে পড়ে আহত মোটরসাইকেল আরোহী অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র শীল (৫৩) মারা গেছেন।
সোমবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্ত জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
ভুবনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তাঁর শ্যালক পলাশ চন্দ্র শীল বলেন, ‘আজ সকালে আমার জামাইবাবু মারা গেছেন। লাশ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
হাসপাতালে ভুবন চন্দ্র শীলের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হচ্ছিল। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গতকাল রাতেও ভুবনের শ্যালক পলাশ চন্দ্র শীল গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ‘ভুবন সাড়া দিচ্ছেন না। যেকোনো দুঃসংবাদের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’
এর আগে গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় ভুবন শীলকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা অস্ত্রোপচারে দুটি গুলির স্প্লিন্টার বের করা গেলেও গুলি মস্তিষ্কে রয়ে যায়। সে সময় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ওই গুলি বের করতে গেলে তাঁর ব্রেনের যে ৪ শতাংশ রেসপন্স ছিল, সেটিও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
গতকাল রবিবার বেলা ১১টা থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, ভুবন চিকিৎসায় কোনো সাড়া দিচ্ছেন না।
গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সিটি পেট্রোল পাম্প এবং বিজি প্রেসের মাঝামাঝি সড়ক দিয়ে ভাড়ায় মোটরসাইকেলে চড়ে বাসায় যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন ভুবন। তাঁর মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায় গুলি। শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ ওরফে মামুনের প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীদের করা গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আহত হন ভুবন।
তাঁকে প্রথমে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাতেই ভুবনকে রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীলের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটজনকে আসামি করা হয়।