২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে রাজধানী হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। এই সংঘর্ষ শেষে দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে দলটির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে।
এমনকি সংঘর্ষকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়াও দলটির জেলা পর্যায়ের নেতাদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে আসামিদের তালিকায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও রয়েছেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রুহুল কবির রিজভী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বরকতউল্লা বুলু, জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ অনেকে।
এ কারণে গ্রেপ্তার আতঙ্কে অজ্ঞাত অবস্থানে রয়েছেন শীর্ষ নেতারা। রবিবার ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিন দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ঢাকা ও ২২টি জেলা থেকে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, সোমবার ৫ হাজার ৫৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৬৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামি অসংখ্য। আর সারা দেশে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৪২ জনকে।
শুধু ঢাকাতে গত দুদিন ১ হাজার ৫৪৪ জনকে আসামি করে ৩৭টি মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭১৬ জনকে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে আইন প্রয়োগ করা হবে। ওই দিন যাঁরা বিশৃঙ্খলা করেছেন, তাঁদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী মামলা ও গ্রেপ্তার করা হবে। তবে এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে না। পেশাদারির সঙ্গে মামলা রুজু করা হচ্ছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও মামলা করছেন।
উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশের অন্তত ছয়টি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এরপর পুলিশের অভিযানের মুখে দলটির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরদিন রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বিএনপি।
দুই দিনে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর যেসব মামলা দেওয়া হয়েছে, তার বেশির ভাগের বাদী পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
বিভিন্ন মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মামলাগুলোতে পুলিশকে হত্যা ও হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি কাজে বাধা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর, পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া, বাসে আগুন দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ আনা হয়েছে।