কেন বিদেশে চিকিৎসা নেননি জাফরুল্লাহ চৌধুরী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ১২, ২০২৩, ০৮:২৬ পিএম

কেন বিদেশে চিকিৎসা নেননি জাফরুল্লাহ চৌধুরী?

মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ ডাক্তার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি নেওয়ার পর উচ্চশিক্ষার্থে লন্ডন যান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দেশের টানে ফিরে আসেন এবং যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করার আগে জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কিডনিরোগসহ বিবিধ স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভুগছিলেন। তারপরও তিনি বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাননি।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সব সময় চেয়েছিলেন একটি কার্যকর সুলভ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামে একটি সাশ্রয়ী সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এখানেই চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এই হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার চিকিৎসায় দেশের বাইরে থেকে কোনো চিকিৎসকও আনতে  রাজি হননি। 

মৃত্যুর আগে যখন পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছিলো তখনও বলেছেন তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসা নেবেন না। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ওই সময় সাংবাদিকদের জানান, তিনি গণস্বাস্থ্যের বাইরে কোনো চিকিৎসা নেবেন না। এমনকি দেশের বাইরেও চিকিৎসার জন্য যাবেন না, এটিই ওনার শেষ কথা।’ 

২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সময়ও বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার প্রস্তাব একবাক্যে নাকচ করে দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

একই বছরের ৩ জুলাই একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে ডা. জাফরুল্লাহকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। ওইসময় কিডনি অকেজো হয়ে গেলে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ওই পরামর্শে রাজি হননি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এর কারণ হিসেবে জানান, ‘বাইরে করাব না। বিদেশে যাব না।’ 

 

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভাষ্যমতে, ২০১৪ সালের প্রথম দিকে তার কিডনিতে সমস্যা ধরা পড়ে। ওই সময় বিদেশি বন্ধুরাও তাঁকে কিডনি প্রতিস্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতিচারণ করে জাফরুল্লাহ বলেন, তাকে হার্ভার্ড বলেছিল বিনা পয়সায় কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেবে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী জবাবে বলেছিলেন, অন্যদের বেলায় বিনা পয়সায় প্রতিস্থাপন করার ব্যবস্থা আছে কি না। তিনি নিজের দেশে চিকিৎসা করাতে চান এবং চিকিৎসা উন্নত করতে চান সবাই যেন সুযোগটা পায়।’

Link copied!