তারা চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১৭, ২০২২, ১০:৩৮ পিএম

তারা চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে

বিভিন্ন দপ্তরে আকর্ষনীয় বেতনে চাকরির দেওয়ার  নাম করে ভুয়া প্রশ্নপত্র ও নিয়োগপত্র প্রদানের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

সোমবার রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আনন্দ নগর এলাকা থেকে ডিবি সাইবারের অর্গানাইজ্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. মোশারফ হোসেন ও মো. জিয়া উদ্দিন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি মোবাইল ফোন, ৭ টি সিম কার্ড, বিভিন্ন চাকরির ভুয়া প্রশ্নপত্র ও ভুয়া প্রবেশপত্র এবং ভুয়া নিয়োগপত্র জব্দ করে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফ করেন ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন দপ্তরের বিভিন্ন পদের চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো তাদের সংগ্রহে রাখতেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে নিজেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন এবং বিভিন্ন পদে চাকরি পাইয়ে দিবে বলে আশ্বস্ত করেন। প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশীর জীবন বৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্যান্য সকল ডকুমেন্ট ইত্যাদি সংগ্রহ করে। পরে উক্ত তথ্যের মাধ্যমে একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ইমেইলে প্রেরণ করে। এরপর বিকাশ/রকেটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে ভাইভার জন্য মনোনীত হয়েছেন মর্মে জানান।

ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার  আরও বলেন, “কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ড এর মাধ্যমে অপর এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিকেল ও অন্যান্য খরচ বাবদ কিছু টাকা বিকাশ/রকেটের মাধ্যমে দিতে বলে। ওই টাকা পাওয়ার পর প্রতারক চক্ররা একটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য চাকুরী প্রত্যাশীদের “QR Code Generator” সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি “QR Code” তৈরি করে ভুয়া নিয়োগপত্রে সেটি স্থাপন করে। পরে প্রার্থীকে বলা হয় যে, “QR Code Scanner” দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি-না যাচাই করুন। প্রার্থী যখন তার মোবাইলের “QR Code Scanner” দিয়ে চেক করে তখন সেখানে নিজের তথ্য দেখায় এবং প্রার্থী চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে এই নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এর মধ্যে তারা ব্যবহৃত ফোনগুলো বন্ধ করে ফেলে।

তিনি আরো বলেন, চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তার দুইজনকে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতেপাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।

চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র কোনোভাবেই আগে পাওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে কোন ধরনের অবৈধ/অনৈতিক পন্থায় তা সংগ্রহের চেষ্টা না করে কেউ প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রস্তাব দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তা জানানোর পরামর্শ দেন সাইবারের এই কর্মকর্তা।

Link copied!