বাংলাদেশে দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাল যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ২৩, ২০২২, ০৭:১০ এএম

বাংলাদেশে দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে ফোন করে এ নিয়ে আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারম্যান। ঢাকায় রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পর দেশটি এ আহ্বান জানাল।

দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তাদের মধ্যে আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। তিনি বলেন, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্ক শক্তিশালীকরণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পারস্পরিক অগ্রাধিকারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন শারম্যান এবং শাহরিয়ার। অন্যান্য ইস্যুর মধ্যে ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের প্রতি পারস্পরিক প্রতিশ্রুতির বিষয়ে আলোচনা করেছেন তারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পুনর্নিশ্চিত করছেন যে বাংলাদেশে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিপূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাষ্ট্রদূতরা সব সময়ের মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পেতে থাকবেন।

প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, কোনো বিষয়ে জনসম্মুখে মন্তব্য করার আগে রাষ্ট্রদূতদেরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সাথে ১২ ডিসেম্বর হওয়ার হওয়ার কথা ছিল এই ফোনালাপ। কিন্তু পরে তা পেছানো হয়। সম্প্রতি ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর ঢাকায় রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ‘নিরাপত্তা উদ্বেগ’ তৈরি হওয়ার বিষয়টি জানায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগে বিএনপির নিখোঁজ নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ‘গুম’ হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ এর সাথে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন তিনি। সুমনের বোন আফরোজা ইসলাম আঁখি ‘মায়ের ডাক’ এর সমন্বয়কারী।

সুমনের বাড়িতে রাষ্ট্রদূতকে ঘিরে ধরে স্মারকলিপি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন ‘মায়ের কান্না’ নামের আরেকটি সংগঠনের কর্মীরা। তখন তড়িঘড়ি করে পিটার হাস গাড়িতে করে সেখান থেকে চলে আসেন। ওই ঘটনার পর সেদিনই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সাথে দেখা করে নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ জানান রাষ্ট্রদূত।

পরে দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ১৪ ডিসেম্বর মায়ের ডাকের সাথে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে শেষ করতে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে। বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বৈঠকটি বাধাগ্রস্ত হয়; রাষ্ট্রদূত যে ভবনে ছিলেন সেখানে ঢুকে পড়তে চেয়েছিল তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের একদল রাষ্ট্রদূতের গাড়িও ঘিরে ফেলে।

এই ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও পাল্টপাল্টি চলছে।

বিএনপি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে এর জন্য সরকারকে দায়ী করছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ‘মায়ের ডাক’র সেই অনুষ্ঠানে ‘মায়ের কান্না’র স্মারকলিপিও নিতে পারতেন।

Link copied!