স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে সেনাবাহিনীকে আরও স্মার্ট করা হবে: সেনাপ্রধান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ৫, ২০২৩, ১১:৩০ পিএম

স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে সেনাবাহিনীকে আরও স্মার্ট করা হবে: সেনাপ্রধান

স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে সেনাবাহিনীকে আরও স্মার্ট করে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি আধুনিকায়ন ও প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণ মহড়ার "নব উদ্যোগ"র চূড়ান্ত মহড়া অবলোকন শেষে সেনাপ্রধান এ মন্তব্য করেন।

এসময় সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। তারই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও। স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে মিলিয়ে স্মার্ট সেনাবাহিনী হবে এটাই কাম্য। সেনাবাহিনীকে আরও স্মার্ট করার জন্য যত জায়গায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে, সেগুলো আমরা বাড়াচ্ছি। আমাদের টিএডিএ, বেতন কাঠামো মান্ধাতা আমলের ছিল, সেটা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। দ্রুতই এটার ফল সবাই ভোগ করবে। এটা একটি প্রক্রিয়ার কথা বললাম, এভাবেই সামগ্রিক সবক্ষেত্রে 'ডিজিটালাইজেশনের যে অ্যাডভানটেজ', সেটা আমরা নিচ্ছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জাতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে যতটা স্মার্ট করা দরকার, সেটা আমরা নিচ্ছি।



প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, শীতকালীন প্রশিক্ষণ আজ শেষ হচ্ছে। আপনারা জানেন যে এ ধরণের একটি প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে অনেক কিছু করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, প্রশিক্ষণে জোর দাও। আমরা উনার নির্দেশনা মোতাবেক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বৃদ্ধি করে 'ফোর্সেস গোল ২০৩০' অর্জনের লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি দিয়ে সেনা প্রধান বলেন, জনগণের আস্থা যদি কোনো বাহিনী অর্জন করতে না পারে, তাহলে সে বাহিনী সাফল্য অর্জন করতে পারেনা। পৃথিবীর কোনো সেনাবাহিনী কোনো যুদ্ধ জয় করতে পারেনি জনগণের সমর্থন ছাড়া। আমাদের বাংলাদেশের মানুষ যাতে সেনাবাহিনীর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখে এবং আমরা যাতে সবসময় তাদের সার্বিক সহযোগিতা পাই সে জন্য আমরা সবসময় জনগণের ভেতরে থাকার চেষ্টা করি।

চূড়ান্ত মহড়া অবলোকনের পর সেনাপ্রধান সেখানে এক সেনা সমাবেশে সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি সৈনিকদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে নানা উপদেশমূলক কথা বলেন। সবশেষে একই ভেন্যুতে আয়োজিত দুপুরের খাবারের আয়োজন হলে সেখানেও সৈনিকদের কাছে গিয়ে খাবারের মান দেখাসহ তাদের ব্যক্তিগত খোঁজখবর নেন সেনাপ্রধান।

এদিকে চূড়ান্ত এ মহড়ার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) শেষ হলো বাংলাদেশ সেনবাহিনীর তিন সপ্তাহব্যাপী পরিচালিত শীতকালীন প্রশিক্ষণ ২০২২-২০২৩ "অনুশীলন নবউদ্যোগ"। এ সময় দেলদুয়ার উপজেলার স্থানীয় উৎসুক বাসিন্দারাও বিভিন্ন নিরাপদ প্রান্ত থেকে চূড়ান্ত মহড়া অবলোকন করেন। সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশন সফলভাবে এই অনুশীলন পরিচালনা করেছে। এই অনুশীলনে সাঁজোয়া বহর, এপিসির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কর্তৃক প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং পদাতিক ও অন্যান্য কোরের সমন্বয়ে শত্রু অবস্থানের উপর আক্রমণ পরিচালনা করা হয়।



এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম এবং আর্মি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরীসহ সেনাসদরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা, ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিজাব) এর সাংবাদিকবৃন্দ এবং অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীরা।  

জানা যায়, গত ১৯ ডিসেম্বর শীতকালীন প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সেনাসদর ও সেনাবাহিনীর সকল ফরমেশন পূর্ণাঙ্গরূপে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন হয়। জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণের প্রতিপাদ্য হলো "যুদ্ধ পারঙ্গমাতা, যুদ্ধোপযোগিতা ও রণপ্রস্তুতি প্রদর্শন'। দেশ সেবায় নিজেদের প্রস্তুত করে তুলতে সরেজমিনে বাস্তবধর্মী বিভিন্ন সামরিক বিষয়াদি অনুশীলনের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়ন সাধন করাই ছিল এই অনুশীলনের মূল লক্ষ্য। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও শীতকালীন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ফরমেশনসমূহ স্ব-স্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অসহায় ও দুস্থ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র ও ত্রাণ বিতরণ, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশুর বিনামূল্যে চিকিৎসা, পরামর্শ প্রদান ও ঔষধ বিতরণ করছে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রেই জনগণের পাশে দাঁড়ায় সেনাবাহিনী।

Link copied!