‘কামরুন্নাহারের পর্যবেক্ষণ বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১৫, ২০২১, ১২:০৪ এএম

‘কামরুন্নাহারের পর্যবেক্ষণ বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর’

রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে চার বছর আগে দু’জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলার রায়ে বিচারক কামরুন্নাহারের দেওয়া পর্যবেক্ষণ বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর এবং এজন্য তাকে কারণ দর্শাতে বলা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।

রবিবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কামরুন্নাহারের বক্তব্য বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর। তার বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ভুল নির্দেশ যায়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন ছিল। তা নেয়া হয়েছে। তাকে কারণ দর্শাতে বলা হবে।’

আনিসুল হক বলেন, ‘বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। মাননীয় প্রধান বিচারপতি এ শোকজ পাঠাবেন। এ শোকজ যখন আমাদের কাছে পাঠানো হবে আমরা তার (বিচারক) কাছে পাঠিয়ে দেব।’ ওই চিঠি পেয়েছেন কী না -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, আমি এখনো চিঠি পাইনি। তবে শুনেছি যে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালত রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলা থেকে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ ৫ আসামিকে খালাস দেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, মামলার দুই ভিকটিম আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত। তারা স্বেচ্ছায় হোটেলে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে সুইমিং করেছেন। ঘটনার ৩৮ দিন পর তারা বললেন, ‘আমরা ধর্ষণের শিকার হয়েছি’। অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া এরপর থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায়- তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

এর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। আইনজীবী, নারী অধিকারকর্মী, সমাজবিজ্ঞানী, অপরাধবিজ্ঞানীসহ সচেতন মহলও এই মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের নামে মামলা হয়।

Link copied!