অবশেষে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১, ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম

অবশেষে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারায় ধর্মভিত্তিক দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও সংগঠনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহ যৌক্তিক হয়, তবে সরকার সেই সংগঠনটিকে তালিকাভুক্ত ও নিষিদ্ধ করতে পারে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনি মতামত পাঠানোর পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং তাদের সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন আর এই নামে রাজনীতি করতে পারবে না।”

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ করে আসছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় সভায় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন ওই জোটের শীর্ষ নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়। জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হল।

ধাপে ধাপে নিষিদ্ধ ছিল জামায়াতের রাজনীতি

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলেই যাত্রা শুরু করে জামায়াতে ইসলামী। তবে পাকিস্তান শাসনামল থেকে শুরু করে বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে রাজনৈতিক দল। ‘৪১’র ২৬ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী হিন্দ প্রতিষ্ঠা হয়। দলটি পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধীতা এমনিকে ‘৪৬ নির্বাচনে মুসলিম লীগকেও সমর্থন করেনি।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উস্কানীর অভিযোগে প্রথমবার পাকিস্তানে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয় ১৯৫৯ সালে।  ১৯৬২ সালে আইয়ুব খান প্রণিত মুসলিম পরিবার আইন অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞারোপ করা হয়। যদিও তারা ১৯৬৫ সালে গণতান্ত্রিক আন্দোলেন হিসেবে সর্বদলীয় গণতান্ত্রিক জোটে যুক্ত হয়।

‘৭০’র নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী পশ্চিম পাকিস্তানে চারটি আসন লাভ করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াতও এর আওতায় পড়ে।

১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়াউর রহমান সরকার সকল ধরনের রাজনৈতিক দলের রাজনীতি উন্মুক্ত করে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন। এ সময় ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি নামক একটি দলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত ছিল।পরে গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এলে ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ গঠিত হয়। এ সময় এর ভারপ্রাপ্ত আমীরের পদ লাভ করেন আব্বাস আলী খান।

২০১৩ সালের ১ আগস্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্ট রায় দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।কিন্তু সেখানেও রাজনৈতিক দল হিসেবে বাতিল করার কথা আসেনি। 

Link copied!