পাল্টা জবাবে মেঘমল্লার বসু

ডাকসুতে শিবিরের বিজয় নিয়ে শশী থারুরের উদ্বেগ ‘ভণ্ডামি’

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ০৯:৩২ এএম

ডাকসুতে শিবিরের বিজয় নিয়ে শশী থারুরের উদ্বেগ ‘ভণ্ডামি’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করায় ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুরকে কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মেঘমল্লার বসু। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

মেঘমল্লার লেখেন, তার বক্তব্য থারুরের কাছে পৌঁছাবে না, আর পৌঁছালেও তা গুরুত্ব পাবে না। তবে তিনি দাবি করেন, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্রীয় সংস্থার হস্তক্ষেপ, ক্রমবর্ধমান ইসলামোফ্যাসিবাদী প্রবণতা এবং বিপুল অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবের মাঝেও সাম্প্রতিক ডাকসু নির্বাচনে তিনি প্রায় পাঁচ হাজার ভোট পেয়েছেন।

থারুরের দক্ষিণপন্থী রাজনীতি বিষয়ক মন্তব্যের জবাবে মেঘমল্লার বলেন, বড় দলগুলোর দুর্নীতিতে মানুষ ক্লান্ত হয়ে বিকল্প খুঁজছে—এ পর্যবেক্ষণ সঠিক হলেও, তার মন্তব্য বাংলাদেশে অতি-ডানপন্থীদেরই শক্তিশালী করছে। তিনি অভিযোগ করেন, থারুর অনিচ্ছাকৃতভাবে জামায়াতের জনসংযোগ কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছেন।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিজয় নিয়ে থারুরের উদ্বেগকে ‘ভণ্ডামি’ বলে আখ্যায়িত করেন মেঘমল্লার। তার দাবি, কেরালার সাবরিমালা ইস্যুতে থারুর নিজেও দক্ষিণপন্থী প্রচারণা চালিয়ে সিপিআইএমকে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাই আগে ভারতীয় রাজনীতিতে হিন্দুত্ববাদী শক্তিকে মোকাবিলা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ভারতের রাজনীতির ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে মেঘমল্লার বলেন, যারা তিন দফা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে হারাতে পারেনি, তাদের অন্য দেশের ছাত্রসংগঠনের নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দেওয়া উচিত নয়। তার মতে, ভারতের ভূমিকা বাংলাদেশে এতটাই ‘বিষাক্ত’ হয়ে উঠেছে যে থারুরের বিবৃতি আসলে শিবিরকে শক্তি জোগাচ্ছে।

ব্যঙ্গ করে থারুরকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও লিখেন, “যদি আপনার অবসর সময় বেশি থাকে, তবে আরও স্ট্যান্ডআপ শো করতে পারেন। আগেরটা বেশ বিনোদনমূলক ছিল।”

নিজেদের লড়াই নিজেরাই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে মেঘমল্লার লেখেন, “আমরা নিজেদের চরকায় নিজেরাই তেল দেব। ভারতের মানুষ একদিন হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের হারাতে সক্ষম হবে বলে আশা করি। আর বাংলাদেশে ইসলামোফ্যাসিস্টদের প্রতিরোধে আমরা জীবন দিতেও প্রস্তুত।”

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে জামায়াত-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক বিজয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শশী থারুর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, এ ঘটনা হয়তো বেশিরভাগ ভারতীয়কে আলোড়িত করেনি, তবে ভবিষ্যতের জন্য এটি উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম স্থগিত) ও বিএনপির প্রতি মানুষের অসন্তোষ তীব্র হয়েছে। অনেকেই বিকল্প হিসেবে জামায়াতের দিকে ঝুঁকছে, ধর্মীয় উগ্রতার কারণে নয়, বরং এ বিশ্বাস থেকে যে জামায়াত অন্তত দুর্নীতি ও কুশাসনে বড় দুই দলের মতো কলঙ্কিত নয়।

থারুর প্রশ্ন তোলেন, এই প্রবণতা কি ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিফলিত হবে? ভারতকে কি তখন প্রতিবেশী হিসেবে জামায়াতের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে?
 

Link copied!