সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ০৯:২০ এএম

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে

Representational image. Photo: Bigstock

গত পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়ে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে বলে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে গণতন্ত্রবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স (আইডিয়া), বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এতথ্য উঠে এসেছে। 

স্টকহোমভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আফগানিস্তান, বুরকিনা ফাসো ও মিয়ানমার—যারা আগে থেকেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিল—তাদের পতন সবচেয়ে বড়।

চতুর্থ সর্বোচ্চ পতন হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। আইডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে ও রাজনৈতিক মিত্রদের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এবং সাংবাদিকদের বাসায় অভিযানের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আইডিয়ার মহাসচিব কেভিন কাসাস-জামোরা এএফপিকে বলেন, “বিশ্বে গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা উদ্বেগজনক।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দেশ (৫৪ শতাংশ) পাঁচটি মূল গণতান্ত্রিক সূচকের অন্তত একটি ক্ষেত্রে অবনতি রেকর্ড করেছে।

কাসাস-জামোরা বলেন, “আমাদের প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধান হলো—বিশ্বব্যাপী সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় তীব্র অবনতি।”

তিনি যোগ করেন, “২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন ঘটেছে। গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের একটি মূল সূচকে এত তীব্র অবনতি আমরা কখনো দেখিনি।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকা ও ইউরোপে ১৫টি করে দেশসহ মোট ৪৩টি দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কমে গেছে।

কাসাস-জামোরা বলেন, “এখন এক ধরনের বিষাক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একদিকে, সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ—যা মহামারির সময়কার কিছু নীতির উত্তরাধিকার—চলমান আছে। অন্যদিকে, ভুয়া তথ্যের নেতিবাচক প্রভাবও আছে। এর মধ্যে কিছু আসল ভুয়া তথ্য, আবার কিছু সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমন করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে।”

আইডিয়ার মহাসচিব আরও সতর্ক করেন যে, বিশ্বব্যাপী প্রচলিত গণমাধ্যম একীভূত হয়ে যাচ্ছে এবং অনেক দেশে স্থানীয় গণমাধ্যম প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে, যা গণতান্ত্রিক আলোচনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।

প্রতিবেদনটি ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের সময়কালকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ফেরার প্রভাব এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।

তবে কাসাস-জামোরা বলেন, “গত বছরের শেষের নির্বাচন এবং ২০২৫ সালের প্রথম কয়েক মাসে আমরা যেসব ঘটনা দেখেছি, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।”

তিনি যোগ করেন, “যুক্তরাষ্ট্রে যা ঘটে তার বৈশ্বিক প্রভাব রয়েছে। তাই এটি বৈশ্বিক গণতন্ত্রের জন্য ভালো লক্ষণ নয়।”

Link copied!