অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর গুলশান থানা পুলিশ চিত্রনায়িকা ববির কথিত স্বামী মির্জা আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগে বলা হচ্ছে, তিনি ‘বিটিএল’ নামে ভুয়া কোম্পানি চালিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়েছেন এবং প্রতারণা করেছেন।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান (পিপিএম) জানান, সম্প্রতি এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টারের একজন কম্পিউটার ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গুলশান-২, রোড নং ৪৪, বাড়ি নং ২৭ এর একটি ফ্ল্যাট থেকে বাশারকে আটক করা হয়।
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, বাশার তার ভুক্তভোগীদের মিথ্যা প্রলোভন দেখাতেন। তিনি দেশজুড়ে ব্যবসায়ীদের নিজস্ব ডিলারশিপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করতেন এবং পরে অজানা স্থানে পালিয়ে যেতেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তার শিকারদের মধ্যে সেনা, পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাশারের বাড়ি পটুয়াখালীর ইসলামাবাদ উপজেলার পশ্চিম আউলিয়াপুরে। গ্রেপ্তারের পর তার প্রতারণার নানা তথ্য প্রকাশ পায়। অনলাইনে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্রিজ, এসি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার সংগ্রহ করলেও তিনি বিক্রেতাকে টাকা পরিশোধ করতেন না। এছাড়া তিনি ব্যাংকের চেক দিয়েও প্রতারণা চালাতেন।
অভিযানকারীরা জানিয়েছেন, বাশারের প্রতারণার জন্য একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করত। তার অফিসের একাউন্টস ও মার্কেটিং কর্মীরা ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্ত করে পণ্য বা ডিলারশিপের জন্য অগ্রিম নেওয়ার দায়িত্বে ছিল। পূর্বে খিলক্ষেত থানায় গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বের হয়ে আবারও একই কৌশলে প্রতারণা শুরু করেছিলেন।
বাশারের সঙ্গে চিত্রনায়িকা ববির সম্পর্ক নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। বাশার নিজেকে ববি’র স্বামী ও ব্যবসায়িক অংশীদার দাবি করলেও নায়িকা তা অস্বীকার করেছেন। তবে একই ছাদের নিচে তাদের উপস্থিতির তথ্যও পাওয়া গেছে।
ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, “মির্জা আবুল বাশার একজন পেশাদার প্রতারক। জনগণকে অনুরোধ করছি, চটকদার বিজ্ঞাপন বা অজানা ডিলারশিপে সহজে নগদ টাকা দেবেন না। আমাদের থানা এলাকায় কোনো ধরনের প্রতারণা আমি হতে দেবো না।”
উল্লেখ্য, বনানী অফিস সংক্রান্ত একটি মামলায় ব্যবসায়ী পলাশ চন্দ্র দাশ অভিযোগ করেছেন, বাশারের অফিসে জোরপূর্বক এক লাখ ৮৫ হাজার টাকার চাইনিজ টেবিল রাখা হয়। ওই মামলায় আরও সাতজন ভুক্তভোগী নাম অন্তর্ভুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর বাশারের সহযোগী এবং তার অপরাধ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের খুঁজে বের করার কাজ চলছে। ভুক্তভোগীরা সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, যারা বাশারের সঙ্গে লেনদেন করেছেন, তারা যেন দ্রুত থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।