‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতির মধ্যে এখনও চার বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
জানা গেছে, ১২ বিচারপতির মধ্যে সর্বশেষ বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান গত ৩১ আগস্ট পদত্যাগপত্র জমা দেন, যা রাষ্ট্রপতি ৭ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করেন।
২০১৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৫ অক্টোবর রাতে ফেসবুকে হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তৎকালীন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম (বর্তমানে এনসিপি নেতা)। পরদিন (১৬ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে এবং অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজও বিক্ষোভে যোগ দেয়।
সেদিন বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা (বর্তমানে হাইকোর্টের বিচারপতি) আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, বিচারপতিদের নিয়োগ ও অপসারণ রাষ্ট্রপতির এখতিয়ারভুক্ত। তিনি জানান, আপাতত ১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না এবং ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর কোর্ট খোলার পরও তারা বিচারকাজে অংশ নিতে পারবেন না।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহালের পর পুনরুজ্জীবিত হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্যের এই কাউন্সিল বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাচ্ছে।
এদিকে, ১২ বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন। বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের মেয়াদ শেষে স্থায়ী বিচারক হননি। বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস বয়সজনিত কারণে অবসরে গেছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি খিজির হায়াতকে ১৮ মার্চ এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে ২১ মে অপসারণ করেন।
সবশেষে বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর বর্তমানে চার বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে কোর্ট প্রশাসন।