মহাকাশ থেকেই ফোনের স্ক্রিনের লেখা পড়বে যে কৃত্রিম উপগ্রহ

শামস তারেক আজিজ

নভেম্বর ২২, ২০২৩, ০৯:২৩ পিএম

মহাকাশ থেকেই ফোনের স্ক্রিনের লেখা পড়বে যে কৃত্রিম উপগ্রহ

উৎক্ষেপণটি পর্যবেক্ষণ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।

নানা বাধা-আপত্তি তোয়াক্কা না করে অবশেষে মহাকাশে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হলো উত্তর কোরিয়ার নতুন কৃত্রিম উপগ্রহ, মালিগইয়ং-১ । বুধবার উৎক্ষেপিত স্যাটেলাইটটি মূলত মহাকাশ থেকে গুপ্তচরবৃত্তি ও গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর উদ্দেশ্যে প্রেরিত হয়েছে, যাতে দেশটির সামরিক শক্তিতে আমূল পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করছে বিশ্বমহল।

চলতি বছরের শুরুতে, পরপর দুইটি গুপ্তচর স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের মিশনে ব্যর্থতার পর, তৃতীয় মিশনে সফলতার দেখা পেয়েছে উত্তর কোরিয়া। 

বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা, ‘কেসিএনএ’ জানায়, মালিগইয়ং-১ নামের উপগ্রহটি ‘সঠিকভাবে’ মহাকাশে এর কক্ষপথে প্রবেশ করেছে, এ সময় উৎক্ষেপণটি পর্যবেক্ষণ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। অনেক দিন ধরেই মহাকাশে একটি গুপ্তচর উপগ্রহ স্থাপনের পরিকল্পনা করে আসছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায় একটি ঘাঁটি থেকে উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে যা দূর  থেকে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি।  

দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। তবে দেশটির  বিশ্বাস, এই  উৎক্ষেপণ কার্যক্রমে দেশটিকে সাহায্য করে রাশিয়া।

এর আগে, সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের সম্পন্ন হয়। যাতেই এ সাফল্য এসেছে। বৈঠকে মস্কো , পিয়ংইয়ংয়কে তাদের মহাকাশ কর্মসূচীতে সাহায্য করার প্রস্তাব দেয়।

আগামীতে এ ধরনের আরও স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। 

সাম্প্রতিককালে বিশ্বজুড়ে গুপ্তচর স্যাটেলাইট উৎক্ষেণের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে, তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে । এর আগে ডিসেম্বরের ১ তারিখের মধ্যে যেকোনো সময় গুপ্তচর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হতে পারে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জাপানকে জানায় দেশটি। 

এ বিষয়ে তখন জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া জানায়, জাতিসংঘের নিয়ম অনুসারে কক্ষপথে কোনো ধরনের গোয়েন্দা বা নজরদারি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন। জাপান মনে করে, ‘স্যাটেলাইট  উৎক্ষেপণের অজুহাতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পরীক্ষা চালাবে উত্তর কোরিয়া।‍‍’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী, ফুমিও কিশিদা পিয়ংইয়ংয়ের এ ধরনের প্রচেষ্টার নিন্দা জানান। তিনি  বলেন, ‘যদি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে কেবল একটি সাধারণ স্যাটেলাইটও উৎক্ষেপণ করা হয় তবে সেটা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার লঙ্ঘন। এতে  জাপানের জাতীয় নিরাপত্তা অবশ্যই মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে।’

উত্তর কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএ তাঁদের প্রতিবেদনে আরও জানায়, “নিজের আত্মরক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে এই উৎক্ষেপণ উত্তর কোরিয়ার একটি বৈধ অধিকার। এটি শত্রুদের ‘বিপজ্জনক সামরিক পদক্ষেপের’ মুখে উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধ প্রস্তুতি উন্নয়নে এই উপগ্রহ সাহায্য করবে।”  

তবে দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতে এ ধরনের স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণ করলে দেশটির সাথে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া এটিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের রেজুলেশনের সরাসরি লংঙ্ঘন। 

Link copied!