২০১১ সালের এই দিনে না ফেরার দেশে চলে যান আজম খান। আসল নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান। আর দেশের সংগীতপ্রেমীদের কাছে তিনি পপসম্রাট।
গানের মাঝেই বেঁচে থাকবেন এই কিংবদন্তি। ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘এত সুন্দর দুনিয়ায়’, ‘অভিমানী’, ‘অনামিকা’, ‘পাপড়ি’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ও চাঁদ সুন্দর’, ‘ও রে সালেকা ও রে মালেকা’, ‘জীবনে কিছু পাব না রে’, ‘বাধা দিয়ো না’সহ অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।
আজিমপুরের ১০ নম্বর কলোনিতে জন্ম আজম খানের। শৈশব কেটেছে আজিমপুর ও কমলাপুরে। আজিমপুরের বাসার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে দেখতেন মাতৃভাষার জন্য মানুষের গণজমায়েত। জানালার বাইরে শুনতেন, ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়’, ‘কইমু না ভাই কইমু না অন্য কথা কইমু না’ গানগুলো। সেগুলো তিনি পাড়া-মহল্লায় গাইতেন। শৈশব থেকেই প্রতিবাদী গান তাকে উজ্জীবিত করত।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে আজম খান তার সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করেন। ঢাকায় প্রবেশের প্রাক্কালে মাদারটেকের কাছে ত্রিমোহনীতে এক সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত করেন পাকিস্তানি বাহিনীকে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। অনেক ক্ষেত্রে যুবসমাজ বিভ্রান্ত, কেউ কেউ বিপথগামী। এই যুবকদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আজম সংগীতকে বেছে নেন অস্ত্র হিসেবে। পশ্চিমা রক সংগীতের আদলে তিনি বাংলা সংগীতে যুক্ত করেন এক নতুন ধারা। তার সৃষ্ট ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ অল্প কিছুদিনের মধ্যে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। আজম খান নেই, তবে তার গাওয়া গানগুলো এখনো সমসাময়িক। এই গানগুলোই হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখবে তাকে।