ঋতুপর্ণকে হারানোর ৮ বছর

বিনোদন ডেস্ক

মে ৩১, ২০২১, ০৬:৩০ এএম

ঋতুপর্ণকে হারানোর ৮ বছর

ভারতের নন্দিত চলচ্চিত্রকার ঋতুপর্ণ ঘোষের নবম প্রয়াণ দিবস ছিল গতকাল রবিবার (৩০ মে)। এই দিনে তাঁকে স্মরণ করে অনলাইনে স্মৃতিচারণা করছেন তাঁর শিল্পস্বজন ও অনুরাগীরা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে অনলাইনে আয়োজন করা হয়েছে তাঁর স্মরণানুষ্ঠানের। এ ছাড়া এই তারকা পুরোনো ছবি দিয়ে স্মৃতিকথায় স্মরণ করছেন গুণী এই নির্মাতাকে।

বাংলাদেশ ও ভারতের চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও শিল্পবোদ্ধারা শক্তিমান এই পরিচালককে হারানোর মর্মব্যাথার কথা প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

গৌরব চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘২০১৩ সালের আজকের দিনেই বিদায় নিয়েছিলেন কালজয়ী ঋতুপর্ণ ঘোষ, এ রকম মানুষেরা আসেন যুগে যুগে কালে কালে...আসেন কেবল প্রাণভরে সৃষ্টি করতে...কিন্তু মানুষটা অকালেই চলে গেলেন, রেখে গেলেন কিছু সৃষ্টি...।’

জয়া আহসান একটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘তাঁর সাহস ছিল চলচ্চিত্রে, সাহস ছিল জীবনে—উন্মোচনের, সীমানা পেরোনোর।’

আশনা হাবিব ভাবনা লিখেছেন, ‘যেই অতীতে তুমি আছে সেই অতীতেই নৌকাডুবি/ হৃদমাঝারে আজও দেখো/ যত্নে রাখা তোমার ছবি।’

ঋতুপর্ণ ঘোষের আবির্ভাব টালিগঞ্জের একটা বিশেষ সময়ে, যখন বাঙালি দর্শক প্রেক্ষাগৃহের প্রতি আগ্রহ প্রায় হারাতে বসেছিলেন। তারকা–নির্ভর হালকা সিনেমা ও বলিউডের ছবির প্রভাব তখন তুঙ্গে। এ সময় বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীল সিনেমার ধারাবাহিকতায় ভালো কিছু সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন ও ঋত্বিক কুমার ঘটকের যোগ্য উত্তরসূরি তিনি।

১৯৯২ সালে মুক্তি পায় ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত প্রথম ছবি ‘হীরের আংটি’। দ্বিতীয় ছবি ‘উনিশে এপ্রিল’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। এই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনিচিত্র শাখায় ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর একে একে ‘শুভ মহরত’, ‘রেইনকোট’, ‘অন্তরমহল’, ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’, ‘খেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘আবহমান’, ‘নৌকাডুবি’, ‘মেমোরিজ ইন মার্চ’, ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘জীবনস্মৃতি’ ছবিগুলো পরিচালনার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রভাবশালী নির্মাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছবিগুলো ঋতুপর্ণ ঘোষকে এনে দেয় ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তা ছাড়া বার্লিন, লোকার্নো, শিকাগো, বুসান, বোম্বের মতো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন এই নির্মাতা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র ঋতুপর্ণ ঘোষ কর্মজীবন শুরু করেন একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায়। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস এবং পাঁচ বছর ধরে অগ্ন্যাশয়ের রোগে ভুগেছেন। অনিদ্রায় ভুগেছেন মারাত্মকভাবে। চিকিৎসা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অ্যাবডোমিনোপ্ল্যাস্টি ও ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্টের পর প্রয়োজনীয় হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি করাতে গিয়ে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যায়। অবশেষে ২০১৩ সালের ৩০ মে কলকাতায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষের মৃত্যু হয়।

 

Link copied!