ছবি: সংগৃহীত
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দারুণ পারফরম্যান্স করায় আইসিসির এপ্রিল মাসের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও নিউজিল্যান্ডের পেসার বেন শিয়ার্সকে পেছনে ফেলে মিরাজের এপ্রিল মাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার খবরটি আজ আইসিসির ওয়েবসাইটে জানানো হয়।
সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসির মাসসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেন মিরাজ। ক্যারিয়ারে এই প্রথম আইসিসির মাসসেরা হলেন ২৭ বছর বয়সী এই স্পিন অলরাউন্ডার।
গত এপ্রিলে সিলেট ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ ১–১ ব্যবধানে ড্র করে বাংলাদেশ। এই দুই টেস্টে ৩ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৮.৬৬ গড়ে এক সেঞ্চুরিসহ মোট ১১৬ রান করেন মিরাজ। ৪ ইনিংসে বোলিং করে সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নেন। সিলেটে প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জিতলেও সফরকারীদের দুই ইনিংসেই ৫টি করে উইকেট নেন মিরাজ। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন। সেই টেস্টে জিম্বাবুয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রানে অলআউট হওয়ার পথে ৫ উইকেট নেন মিরাজ। ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
এপ্রিল মাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পর আইসিসিকে মিরাজ বলেছেন, ‘আইসিসির মাসসেরা হওয়া অবিশ্বাস্য সম্মান। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্য আইসিসির পুরস্কারই সর্বোচ্চ, আর বৈশ্বিকভাবে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়াটা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। এসব মুহূর্ত আমার ক্যারিয়ারের গতিপথকে মনে করিয়ে দেয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে ২০১৬ অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় হওয়া ছিল আমার জন্য অনেক বড় প্রেরণা। এই পুরস্কারটিও তেমনই বিশেষ কিছু।’
মিরাজ আরও বলেছেন, ‘আইসিসির এমন স্বীকৃতি আমাকে দেশের জন্য আরও ভালো করার প্রেরণা। সতীর্থ, কোচ ও ভক্তদের ধন্যবাদ জানাই—এই পুরস্কার তাদেরও।’ বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেটারদের মধ্যে মিরাজের আগে সর্বশেষ আইসিসির মাসসেরা হয়েছেন সাকিব, ২০২৩ সালের মার্চে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে বল হাতে ঝলক দেখান মুজারাবানি। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এ পেসার দুই টেস্ট মিলিয়ে নেন মোট ১০ উইকেট। এর মধ্যে ৯টিই সিলেটে, যা চার বছর পর জিম্বাবুয়েকে টেস্ট জেতাতে সহায়তা করে। সিলেট টেস্টে সেরা খেলোয়াড়ও হন মুজারাবানি।
নিউজিল্যান্ডের পেসার সিয়ার্স গত মাসে আলো ছড়িয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। নিজেদের মাঠে বাবর–রিজওয়ানদের ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে কিউইরা। সিয়ার্স প্রথম ওয়ানডেতে না খেললেও শেষ দুই ওয়ানডেতে পাঁচটি–পাঁচটি করে নেন ১০ উইকেট।
২০২১ সাল থেকে মাসসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দিচ্ছে আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির একটি স্বাধীন ভোটিং একাডেমি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করেন। প্যানেলে আছেন সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও ক্রীড়া সাংবাদিক। এ ছাড়া দর্শকেরাও আইসিসির ওয়েবসাইটে গিয়ে মনোনীত তিন খেলোয়াড়ের একজনকে ভোট দিতে পারেন।
নারী–পুরুষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের চার ক্রিকেটার চারবার আইসিসির মাসসেরা হলেন। ২০২১ সালের মে মাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব জিতেছেন দুবার—২০২১ সালের জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালের মার্চে। একমাত্র বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে নাহিদা আক্তার আইসিসির মাসসেরা স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে।
মেয়েদের বিভাগে এপ্রিল মাসের সেরা হয়েছেন স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হেইলি ম্যাথুজ ও পাকিস্তানের অধিনায়ক সানা ফাতিমাকে পেছনে মাসসেরা হন ব্রাইস। পাকিস্তানে গত মাসে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ রান করার পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন তিনি।