মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে আবার কথা উঠেছে। আর এ ব্যাপারে আজ কথা বলেছেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু। দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের পঠকের জন্য পুরোটা তুলে ধরা হলো-
রিয়াদ ইস্যু—
এটা আসলে এখন পর্যন্ত অনেকবার বলা হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন অলরেডি যে রিয়াদের ব্যাপারটা আমাদের চিফ সিলেক্টর বলেছে। সো আমরা ক্রিকেট বোর্ড আসলে যেভাবে কাজ করে যেভাবে কাজ সব সময় করে এসেছে প্লেয়ার তৈরি করা থেকে খেলানো। একদম জিরো লেভেল গ্রাউন্ড থেকে টপ লেভেল পর্যন্ত যেভাবে প্রসেসের মধ্যে চলে ক্রিকেট। সেই প্রসেসেরই অংশ হিসেবে সমস্ত কিছু নির্ধারণ করা হয়। যেটি হয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্ষেত্রে সেটা আসলে যেভাবে আলোচনায় আসছে, সেটা আসলে ওইভাবে আলোচনায় আসার মতো মনে হয় না এই জন্য যে যার শুরু আছে, তার একটা সময় শেষ আছে। তো প্রত্যেকটা প্লেয়ারেরই একটা সময় ন্যাশন্যাল টিমের অন্তর্ভূক্ত হয়, একটা সময় বাদ পড়ে। সো এটা একটা অবিভিয়াস প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যায়। যদি বিশ্বকাপে টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে যেই একটা ব্যাক আপ প্লেয়ার ইনজুরড কেউ হয় তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য যদি কোনো প্লেয়ারকে মনে করে সেখানে রিয়াদকে রাখা দরকার তখন হয়তো রাখবে।
৭-৮ জনের ক্যাম্প—
এই ব্যাপারটা হয়তো ক্রিকেট অপারেশনস ভালো বলতে পারবে। কারণ এটা হয়তো তাদের কল। এখানে যারা আছে টিম ম্যানেজমেন্ট তারাই চিন্তা করবে। ওই জায়গাটা যদি কাউকে রাখা হয় বা যদি যদি কাউকে রাখার প্রয়োজন হয় তাহলে কোন প্লেয়ারের স্থলাভিষিক্ত কে হবে এটা তারাই ভালো বলবে। যেহেতু এই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট বোর্ড থেকে আসেনি ওইটা যখন আসবে তখন অবশ্যই আপনারা জানতে পারবেন।
ক্যাম্প হবে কি না—
এখনও আমার কাছে এই ধরনের কোনো খবর নাই অফিসিয়ালি। লাইক মিডিয়া কমিউনিকেশনস থেকে আপনাদেরকে জানানোর মতো। আমাদের প্রত্যেকটা ডিপার্টমেন্ট থেকে আপনাদের জানানোর জন্য আমাদের কাছে আসে সেই ধরনের কোনো ইনফরমেশন হিসেবে এখনও আমাদের কাছে সেটি আসেনি।
তামিম–
তামিমের যেটি চলছে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার রিহ্যাবিলিটেশন যেভাবে চলার কথা সেইভাবেই আছে এখনও। তামিমের যে সময়টুকু লাগার কথা ওই সময়টুকু এখনও পর্যন্ত তাই আছে। এরপরে ওর যতটুকু সময় লাগার কথা ছিল, সেটি লাগার পরে তারপরে যদি মনে হয় ওরটা শেষ হবে বা সেখান থেকে শুরু হবে তখন সেইভাবে চলবে।
তামিমের ব্যাপারে নতুন আপডেট—
নতুন কোনো আপডেট নাই। যদি আজকে থেকে ওর সবকিছু শেষ হয়, কালকে থেকে ব্যাটিং শুরু করার কথা থাকে তাহলে সেভাবে করবে।
রিয়াদের চুক্তি—
ওই একই কথা বলব আমি। কারণ আপনার যেই নিয়ম ক্রিকেট বোর্ডের আছে সেই নিয়ম অনুযায়ী যাবে। কোনো প্লেয়ারের যদি সেই রকম নিয়ম থাকে যদি এক বছর ন্যাশন্যাল টিমের বাইরে থাকে তারপর তার কন্ট্রাক্ট ৬ মাস শেষ হলে কন্ট্রাক্ট রিনিউ না করার আমাদের সেই সিস্টেম যদি থেকে থাকে সেই ভাবে চলবে। কারণ, আপনাকে আমি এইভাবে বলতে চাই, হয়তো আপনি একটা দায়িত্বে আছেন, আপনি যদি এই দায়িত্বে না থাকেন অন্য একজন আসেন তাহলে কতদিন কন্ট্রাক্ট রিনিউ করবে?নিয়মের মধ্যে থেকে আসলে সবকিছু যাবে। ক্রিকেট বোর্ডের যেই নিয়ম আছে সেই নিয়মে সবকিছু হবে।
রিয়াদকে নিয়ে প্রেশার–
না। আসলে ওই রকমভাবে কোনো প্রেশার ফিল করছি না ওইজন্য যে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথা যদি বলি আমাদের বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে অবদানটা কখনই অস্বীকার করার মতো না। এবং কখনও করাও হবে না। বাট একটা ব্যাপার যেটি বললাম যে, যেহেতু একসময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দলে এসেছিলেন একটা সময় নিয়ম অনুযায়ী দল থেকে বাদ পড়বেন। দুঃখজনক হলেও এটা সত্য। এটাই নিয়ম। পৃথিবীর নিয়ম এইভাবেই চলে। সেই নিয়মে তার বাদ পড়া। তো দুঃখ লাগবে, খারাপ লাগবে তার মতো অভিজ্ঞ প্লেয়ার আমাদের এইখানে নাই। সম্পূর্ণ একটা ব্যাপার। বাট তার জায়গায় যারা আসবে, নতুনদের….একটা সময় মাহমুদউল্লাহ ছিলেন না। সেও কারও জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হয়েছিল। যারা তখন বাদ পড়েছে তাদের কাছেও খারাপ লেগেছে। তাদের দর্শক যারা ছিল, তাদের সাপোর্টার যারা ছিল, তারাও তখন খারাপ বোধ করেছে। এখন যারা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্য আন্দোলন করছে বা বলছে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এটাও ওই একই ব্যাপার। একই জিনিস। তো খারাপ লাগা থেকে এটা করা। দর্শকদের যেই চাহিদা, ফ্যানদের যেই একটা ব্যাপার থাকে তাদের হিরোদেরকে নিয়ে সেই রকমই জিনিস চলছে। এটা আবেগের ব্যাপার। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ব্যাপারে সব সময় বলি, বাংলাদেশের মানুষের আবেগের খুব গভীরে এটা স্থান করে নিয়েছে। সেই হিসেবে এটা আবেগের জায়গা থেকে চলতে থাকবে। কিছু করার নাই।
সব পক্ষের কাজ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করেন কি না—
অবশ্যই। আমি সব সময় একটা কথা বলে আসছি এবং আমরা সব সময় বলি, বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় আসার পেছনে অবদান যদি বলি আপনাদের কথাও কিন্তু চলে আসে অটোমেটিক। প্লেয়াররা ভালো খেলেছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ভালো রোল প্লে করেছে এবং আপনারা সেটা দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। সো জার্নালিস্ট যারা আছেন, সংবাদমাধ্যম যারা আছেন তারা কিন্তু ক্রিকেটের একটা বড় স্টেক হোল্ডার। সো অবশ্যই আপনাদের মাধ্যমেই যেহেতু ক্রিকেটের বিস্তৃতি, সেটা এখন যেমন আছে, ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। জার্নালিজমের যে ব্যাপার ছিল জানার্লিস্টদের সংখ্যার যে ব্যাপারটা ছিল এখন কিন্তু সেই সংখ্যাটা অনেক বেড়ে গেছে। আগে মাধ্যম যেটা ছিল, আগে কিন্তু প্রিন্ট মিডিয়া ছিল, এরপর ডিজিটাল চলে এসেছে টেলিভিশনে। অনলাইন চলে এসেছে এই সবগুলো জায়গায় ক্রিকেটের চাহিদা কতটুকু দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সো এইখানে আপনাদের রোলটা অবশ্যই খুবই জরুরি। আমার মনে হয় যে একটা ইন্সটিটিউশন যেভাবে চলার কথা ঠিক সেভাবে চলছে কি না, সেটা দেখে সেইভাবে প্রশ্ন তোলা যায়। বাট কারও অন্তর্ভূক্তি বা অন্তর্ভূক্তি থেকে বাদ পড়া হয়………..
এশিয়া কাপ সিলেকশন
এখন এশিয়া কাপের যে দলটা সিলেক্ট করা হয়েছে সেটি এশিয়া কাপ খেলার পর সেখানে পারফরম্যান্সের ব্যাপার তো থাকবে। দেখেন আমাদের যে ব্যাক টু ব্যাক সিরিজগুলো আছে এশিয়া কাপের পর পর আমাদের নিউজিল্যান্ড সিরিজ। তারপর বিশ্বকাপ। এই জায়গায় এশিয়া কাপে কেউ যদি খারাপ করে এরপরে সেখানেও যদি তার পারফরম্যান্স ওই রকম না থাকে। তাহলে আমাদের দল যদি টিম ম্যানেজমেন্ট যদি ব্যাক আপ প্লেয়ার আছে সেই চিন্তা করে রাখা তাদের অবশ্যই অন্তর্ভূক্ত করবে। আমাদের এখানে এখন তো ব্যাক আপ তৈরি আছে। আমরা যেটা বলি, আমাদের পাইপ লাইনের প্লেয়ার যত বেশি সমৃদ্ধ থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য তত বেশি আশার কথা। সুফল বয়ে নিয়ে আসবে। এই জায়গায় আমরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ব্যাক আপ প্লেয়ার, পাইপ লাইনে যারা আছে তারা সব সময় রেডি থাকে। একজন খারাপ খেললে যেন তারা আসতে পারে। এইখানে সব সময় সত্যি যে ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়। এইখানে নিজের পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার নেই। এখানে যে ভালো খেলবে বাংলাদেশ টিমে সেই থাকবে। এটাই চিরন্তন সত্য।