করোনাভাইরাসের সংক্রমণপ্রতিরোধী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ টিকা দুই দফায় দেশে এসে পৌঁছেছে। অন্যদিকে,চীন থেকে কেনা দেশটির তৈরি সিনোফার্মের ২০ লাখ টিকাও দুই চালানে দেশে পৌঁছেছে।
শনিবার (৩ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টায় দ্বিতীয় ধাপে সিনোফার্মের ১০ লাখ এবং সকাল পৌনে ৯টার দিকে মডার্নার সাড়ে ১২ লাখ ডোজ টিকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দরের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিমানবন্দরের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন গণমাধ্যমে বলেন,‘দুই দফায় চারটি ফ্লাইটে মডার্না ও সিনোফার্মের মোট ৪৫ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসে পৌঁছেছে।’
এর আগে, শুক্রবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত ১১টা ২১ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট মডার্নার টিকা নিয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপরই চীনের কাছ থেকে কেনা টিকার প্রথম চালান হিসেবে ১০ লাখ সিনোফার্মের টিকা বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
শুক্রবার রাতে মডার্নার টিকা গ্রহণ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন। ছবি:পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
বিমানবন্দরে মডার্নার টিকা গ্রহণের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারসগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে এসব টিকা পাঠানো হয়েছে। মডার্নার টিকা নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের চারটি টিকা এলো।
মডার্নার টিকার প্রধম চালানে আসা ১৩ লাখ টিকা গ্রহণের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ১৩ লাখ টিকা গ্রহণ করলাম। আরও ১২ লাখ ডোজ টিকা শনিবার (৩ জুলাই) সকালে এসে পৌঁছাবে।’
শুক্রবার রাতে মডার্নার টিকা গ্রহণের পর সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। ছবি:পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
গণটিকাদান কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জোরেশোরে শুরুর পরও কাঙ্ক্ষিত টিকা না পাওয়ায় তা ধরে রাখতে পারিনি। আশা করছি টিকার আর কোনো অভাব হবে না। আমরা বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাচ্ছি, আগামীতে আরও পাব। ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ কোটি টিকা আসবে, যা ৫ কোটি মানুষকে দেওয়া যাবে।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মডার্নার টিকা ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সীদের দেওয়া যায়। টিকাটির প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ টিকা সংরক্ষণ করতে হয়।
মডার্নার টিকা দেশে এসে পৌঁছানোর ফলে এটি বাংলাদেশে আসা করোনাভাইরাসের চতুর্থ টিকা। এর আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক এবং চীনের সিনোফার্মের টিকা এসেছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (২৯ জুন) রাতে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কারিগরি কমিটি কর্তৃক প্রয়োজনীয় সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মডার্নার টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনার আটটি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। অষ্টমটি হলো মডার্নার টিকা।