শীতের হিমেল হাওয়ার আনাগোনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তুলে রাখা জ্যাকেট, সুয়েটার, শাল, লেপ ও কাঁথা প্রায় সকলেই নামিয়ে ফেলেছেন। আর শীতের পোশাক গায়ে জড়ানোতে যত আনন্দ, ঠিক ততই ঝক্কি পোহাতে হয় শীতের পোশাকের যত্ন নিতে গিয়ে। সবচেয়ে বড় কথা এই সব কাপড়ের যত্ন অন্যান্য কাপড়ের থেকে আলাদা।
শীতের কাপড় পরিষ্কারের জন্য একটু যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। চলুন জেনে নিই শীতের কাপড়ের যত্নআত্তি-
চামড়ার পোশাক
১) চামড়ার জ্যাকেট আর্দ্র পরিবেশে না রাখাই ভাল। তাই এটি ব্যবহার করার সময়ে বেশ সচেতন থাকতে হবে। জ্যাকেট ব্যবহারের পর কাপড়ে মুড়ে রাখুন। খুব চড়া রোদে চামড়ার জ্যাকেট শুকোতে না দেওয়াই ভাল।
২) চামড়ার জিনিসপত্রের উপযুক্ত আর্দ্রতা বজায় রাখতে মোম ও সিলিকনযুক্ত লেদার কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। এতে চামড়া যেমন ভাল থাকে, তেমনই নতুনের মতো দেখতে লাগে। জ্যাকেটে যদি কোনও কারণে ছোটখাটো দাগ লাগে, তবে তা তোলার জন্য মৃদু ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
৩) চামড়ার পোশাকে ভাঁজ পড়লে কিন্তু মুশকিল। কারণ, চামড়ার পোশাক ইস্ত্রি করার সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে উষ্ণতা সর্বনিম্ন মাত্রায় নামিয়ে চামড়ার পোশাকের উপর একটি কাপড় রেখে ইস্ত্রি করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যেন গরম ইস্ত্রি সরাসরি চামড়ার উপরে না দিয়ে ফেলেন।
৫) অমসৃণ কোনও কিছুর সঙ্গে যাতে চামড়ার জ্যাকেটের ঘষা না লাগে, তা খেয়াল রাখা জরুরি। তাই চামড়ার জিনিস আলমারিতে আলাদা তাকে রাখাই ভাল।
৬) চামড়ার জ্যাকেট ভাঁজ না করে হ্যাঙারে ঝুলিয়ে রাখুন। তাতেই যত্নে থাকবে সেটি।
সোয়েটার
১. উলেন সোয়েটারের ববলিন থেকে অনেকের অ্যালার্জি হয়। তাই ব্যবহারের আগে রেজর বা ব্লেড দিয়ে সতর্কভাবে চেঁছে সোয়েটার থেকে ববলিন দূর করে নিন। নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন।
২. উলেন শীতের কাপড় ড্রাই ওয়াশ করাই ভালো। কারণ পানিতে ধোয়ার ফলে বেশির ভাগ উলের কাপড়ের আকার নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু কাপড়টি যদি হ্যান্ডওয়াশ করতে হয়, তাহলে তার জন্য আপনাকে মৃদু এবং কম ক্ষারের ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন।
৩. ধোয়ার সময় ডিটারজেন্ট যেন পানিতে পুরোপুরি মিশে যায়। ধোয়ার সময় কাপড়টি উল্টিয়ে নিন। কাপড় জোরে কচলাবেন না। শুকানোর জন্য ওয়াশিং মেশিনের ড্রায়ার ব্যবহার না করে এর পরিবর্তে তোয়ালে কাপড়ের ওপর পাঁচ মিনিট চেপে ধরে পানি বের করে ফেলুন। কাপড় কখনো নিংড়াবেন না। ছায়ায় শুকাতে দিন, কারণ সরাসরি সূর্যের আলোতে কাপড়ের রং বিবর্ণ হয়।
৪. ধোয়ার পর কাপড় যদি কুঁচকে যায়, তাহলে আয়রন করে নিতে পারেন। কাশ্মীরি সোয়েটার আয়রনের সময় কাপড় ও আয়রনের মধ্যে পরিষ্কার তোয়ালে রেখে নিন। এতে কাপড়ের ফেব্রিক ভালো থাকবে।
৫. সোয়েটার পরে হেয়ার স্প্রে বা পারফিউম ব্যবহার করবেন না। দাগ হতে পারে।
লেপ বা কম্বল
লেপ যদি শিমুল তুলার হয় তবে তা কাচাকুচি কিংবা ড্রাই ওয়াশ করা যায় না। এক্ষেত্রে লেপ বের করার কয়েকবার রোদে দিন। তবে লেপের কভার আলাদা করে কেচে নিতে হবে।
কম্বলের ক্ষেত্রেও একই উপায়ে যত্ন নিন। শিমুল তুলার না হলে কাচতেও পারেন। এক্ষেত্রে পানিতে শ্যাম্পু গুলিয়ে তাতে কিছুক্ষণ কম্বল ভিজিয়ে ধুয়ে নিন। তবে কম্বল ওজনে ভারী হয় খুব। সেক্ষেত্রে লন্ড্রিতে দিতে পারেন।