অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করাসহ অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ফাঁসের ঘটনার পর নৈতিক স্খলনের দায়ে পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজের ভোরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।
দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পরম শ্রদ্ধেয় মমতাময়ী মা, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা, আমি যে ভুল করেছি তা আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে মাফ করে দিবেন। আপনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমি সবসময়ই মাথা পেতে নিবো আমার বাবার মতো।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয় শেখ হাসিনা’।
এর আগে, মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) নিজের মন্তব্যেরে জন্য মা-বোনদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তিনি।
ওই ফেসবুক পোস্টে মুরাদ হাসান বলেন, “আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।”
আওয়ামী লীগ ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে ডা. মুরাদ হাসান ওই পোস্টে আরও বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিবো আজীবন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডা. মুরাদ নিজের পদত্যাগপত্র ইমেইলে পাঠিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করায় মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি করে বিরোধী দল বিএনপি। অন্যদিকে, নারী বিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে তার পদত্যাগ দাবি করে বিবৃতি দেন নারী অধিকার কর্মীরাও।
এছাড়া, চিত্রনায়ক ইমন ও অভিনেত্রী মাহির সঙ্গে ফোনালাপে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ‘ধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। তার বক্তব্যজুড়ে ছিল অশ্রাব্য অশালীন শব্দ।
জাইমা রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এবং ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় চরম বিতর্কের মুখে পড়েন ডা.মুরাদ হাসান। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। কোনো কোনো বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহিত হওয়ার পর তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ৈ দেন।