করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনে রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর ছিলো কড়াকড়ি অবস্থান। পুলিশ র্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহিনি ও বিজিবিকে টহল দিতে দেখা গেছে। তবে আজকে গত কয়েকদিনের তুলনায় সাধারণ মানুষের ভিড় ছিলো অনেক বেশি।
রিকশা, পণ্য পরিবহন গাড়ির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির চাপও ছিলো অনেক বেশি। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কলেজগেট, সাইন্সল্যাব, শাহাবাগ, ফার্মগেট, গুলিস্তান, বাংলামোটর ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সড়কে কড়াকড়ি থাকলেও গলির ভিতর বেশিরভাগ দোকানের শাটার আধখোলা। পুলিশ ভিতরে প্রবেশ করলে প্রায় একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় সবগুলো খোলা থাকা দোকানের শাটার। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফল, সবজি বিক্রি করা ফেরিওয়ালারাও ভ্যান নিয়ে সরে যায় গলির আরো ভেতরে। পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়ার মিনিট খানিক পরে আবার উঠে যায় দোকানের শাটার। তবে এমন ঘটনা ঘটছে প্রতিদিনই, দিনে কয়েকবার।
এ ধরনের ঝুকি নিয়ে কেনো দোকান খুলছে জানতে চাইলে দোকানদার আলমগির বলেন, ’বাজার করার টাকা নেই। পেটতো চালাতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়ে দোকান খুলেছি’।
শুধু আলমগির নয় আলমগিরের মতো প্রত্যেক দোকানদারই ঝুকি নিয়ে দোকান খুলে। আলমগিরের মতো একই কথা বললেন আরেক দোকানদার শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এলে কিছু করার থাকে না। তারাতো কথা শুনতে চায় না। আমাদের দোকান নিত্যপণ্যের, কিন্তু তারা বন্ধ করতে বলে। আমাদেরতো টিকতে হবে। মানুষেরও কেনাকাটার দরকার আছে’।
তবে অনেক জায়গায় পুলিশের চেকপোস্টের সামনে ছিলো ভালই কড়াকড়ি। গাড়ি ও রিকশার যাত্রীদের থামিয়ে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কেন তারা বের হয়েছেন। সঠিক জবাব না পেলে রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে, প্রাইভেট কার চালকদের করা হচ্ছে জরিমানা। পুলিশের কড়াকড়িতে এসব চেকপোস্টে কিছুটা জটলাও তৈরি হচ্ছে মাঝে মধ্যে।
আজকে দিনে মানুষের চাপ কেমন জানতে চাইলে তেজগাঁও চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনরত তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ’সকাল নয়টার পর থেকে মানুষের চলাচল বেড়েছে। যাঁরা বের হচ্ছেন, অধিকাংশই রোগী বা রোগীর স্বজন পরিচয় দিচ্ছেন। কেউ কেউ কোভিড-১৯-এর টিকা বা পরীক্ষার জন্য বের হয়েছেন বলেও জানাচ্ছেন। বিদেশগামী লোকের সংখ্যাও অন্যদিনের তুলনায় বেশি পাওয়া গেছে। ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানসহ অনেক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকার কারণে যৌক্তিক কারণেই অনেকে বের হচ্ছেন। তবে অনেকেই যৌক্তিক কারণ ছাড়াই রাস্তায় বের হচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।