হাফিজের চার বন্ধুর এলএসডির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ২৪, ২০২১, ১০:৪৪ এএম

হাফিজের চার বন্ধুর এলএসডির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি?

ঢাবি শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের অপমৃত্যুর মামলায় তদন্তের জন্য তার বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাফিজের বন্ধুদের এলএসডির সাথে সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে চূড়ান্ত ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে তার বন্ধুরাও এলএসডি গ্রহণ করেছিল কিনা। 

যে বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে

২৩ মে হাফিজের লাশ শনাক্ত হওয়ার পর ২৪ মে পুলিশের অপমৃত্যু মামলায় তদন্তের জন্যে হাফিজের সাথে কার্জন হলের আড্ডায় উপস্থিত তিন বন্ধুকে(বাপ্পী, রাফসান,মাসুদ) জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে প্রথমে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে আরও এক বন্ধু অন্তু ঠাকুরসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। সেদিনের আড্ডায় উপস্থিত আসিফ মোহাম্মদ বাপ্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের, অন্তু ঠাকুর এবং নূর উদ্দিন আল মাসুদ পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আড্ডায় থাকা অপরজন, খন্দকার রাফসান ঢাকা কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

প্রাথমিক তদন্তে এলএসডি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) মিশু বিশ্বাস জানান, হাফিজের ঘটনাতো অনেক আগেই শেষ। চার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে কয়দিন তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি জানান,কয়দিন না, যখন জিজ্ঞাসাবাদের দরকার হয়েছে তখন ডাকা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তাদের মাদকসেবনের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

প্রথমবারের মত এলএসডি নেয় হাফিজ 

উপস্থিত বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদে হাফিজ প্রথমবার এলএসডি নিয়েছিল বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি প্রধান। হাফিজ হত্যার প্রকৃতরহস্য উদঘাটনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং সহকারী প্রোক্টর লিটন কুমার সাহা দ্য রিপোর্টকে জানান, এখনও তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে দাখিল করা হবে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাফিজ আত্মহত্যা করেছিল বলেই ধারণা করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক দ্য রিপোর্টকে জানান, এই মামলার তদন্ত করছে শাহবাগ থানা,আমরা তার বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে  এলএসডি চক্রকে গ্রেফতার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তার বন্ধুরা জানিয়েছে সে এলএসডি সেবন করতো। এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে এক্সপার্ট অপিনিয়ন বলতে পারবে সে সেদিন এলএসডি নিয়েছিল কিনা।

ঈদের পরদিনই মাদকসেবন

উল্লেখ্য গত ১৫ মে কার্জন হল এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী হাফিজ নিখোঁজ হলে ৮দিন পর ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাওয়া যায় তার অজ্ঞাতনামা মরদেহ। হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম একশানের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে পালন করছিল। ১৯ মে শাহবাগ থানায় জিডি করতে যায় তার বন্ধুরা কিন্তু শাহবাগ থানার এক কর্মকর্তার পরামর্শে পরের দিন ২০মে সেই জিডি করা হয় হাফিজের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়র কসবা থানায়। ২৩ মে ঢাকা মেডিকেল মর্গে তার মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহ শানাক্ত হওয়ার পরেই জানা যায় ১৫মে শহীদমিনার এলাকায় এক ডাবওয়ালার কাছ থেকে  নিজের গলা নিজেই যখম করেছে। মৃত্যু সময় সে আশেপাশের এলাকার রিক্সাচালকদের আমাকে মাফ করে দেন বলে অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। সারাগায়ে রক্তমাখা গলাকাটা হাফিজকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায় উপস্থিত পুলিশ। ঢাকা মেডিকেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাফিজকে মৃত ঘোষণা করে ১৫মে রাত ৯.৪০মিনিটে জানায় শাহবাগ থানা পুলিশ।

Link copied!