বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির

ইউএনবি

নভেম্বর ২৫, ২০২৩, ০৪:১৯ পিএম

বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করছে বিএনপি। 

বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।

রিজভী বলেন, ‘রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে কিছু মন্তব্য করেছেন বলে বাংলাদেশের জনগণ ও বিএনপির নজরে এসেছে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজনের জন্য বিরোধী দলের এক সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেন জাখারোভা।

রিজভী বলেন, ‘জাখারোভার বক্তব্য একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষার সম্পূর্ণ বিরোধী। বিএনপি ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।’

২০১৪ ও ২০১৮ সালের প্রহসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কলঙ্কিত ট্র্যাক রেকর্ড ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস করে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের অধীনে একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অসম্ভব।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক বিরোধী শক্তি তাদের চুরি হওয়া ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সংগ্রাম করছে।

তিনি বলেন, ‘পুলিশের নৃশংস নিপীড়ন  এবং পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের যৌথ হামলা মোকাবিলা করে বর্তমানে আমাদের দেশের জনগণ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও আন্তর্জাতিক মানের শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে।’

রিজভী বলেন, গত কয়েক মাসে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় সদরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে অসংখ্য সমাবেশের আয়োজন করেছে।

তিনি বলেন, ‘কোনো বিদেশি কূটনীতিকের এ ধরনের সমাবেশে সহায়তা করার প্রশ্নটি শুধু অসত্যই নয়, গণতন্ত্রের জন্য জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট মনগড়া অভিযোগ।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে জোট বেঁধে এবং জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জাখারোভার বক্তব্য নিজেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল, যা অপ্রত্যাশিত ও দুর্ভাগ্যজনক।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে এই স্বৈরাচারী শাসনের সূচনার পর থেকে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে তাদের স্বজনসহ লাখ লাখ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করেছে জাখারোভার বক্তব্য।

রিজভী বলেন, বর্তমানে গণতান্ত্রিককামীরা গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, আইনের শাসন ও বাকস্বাধীনতার জন্য রক্ত ঝরিয়ে রাস্তায় নেমেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বের গণতন্ত্রপ্রিয় দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ইতিবাচক ভূমিকাকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করে। অনুপ্রেরণামূলক কূটনৈতিক উদ্যোগ রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও মতাদর্শকে অতিক্রম করে জনগণের জন্য ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের অভিন্ন লক্ষ্যে বাংলাদেশীদের ঐক্যবদ্ধ করেছে।

রিজভী বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পাশে অন্য কোনো দেশকে দেখতে গণতন্ত্রপন্থী নাগরিকরা পছন্দ করে না।

তিনি বলেন, পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থে রাশিয়া বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু। বিএনপি রাশিয়ার ঐতিহাসিক অবদানকে স্বীকৃতি দেয় এবং দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে মূল্য দেয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রাশিয়া বাংলাদেশিদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাবে না। আমাদের জনগণ যখন ভোটাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন রাশিয়ার সমর্থন করাই উচিত হবে।’

Link copied!