প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প যাত্রা শুরুর থেকেই সাধারণ মানুষ মনে আশা বেঁধে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে। রাজধানীতে নির্মিত দ্রুতগতির উড়ালসড়ক নিয়েও এমনই আশা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তারা। গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ১১.৫ কিলোমিটার পথ অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ উদ্বোধন করা হলেও গণপরিবহনের ব্যবস্থা না থাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার ছাড়া সাধারণ মানুষ উড়ালসড়কটিতে ওঠার সুযোগ পায়নি। অবশেষে এসেছে উড়ালসড়কে ওঠার সুযোগ।
উদ্বোধনের পর দিন রাষ্ট্রীয় পরিবহন ব্যবস্থা বিআরটিসির পক্ষ থেকে উড়ালসড়কে প্রাথমিকভাবে ৭৯টির মতো বাস চালু করার কথা বলা হয়েছিল কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সংস্থাটি। অবশেষে কিছুদিন পর হলেও নিয়মিত সার্ভিসে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস চালু করতে যাচ্ছে বিআরটিসি।
বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে শুরুতে উত্তরা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ৮টি দ্বিতল বাস চলাচল করবে। কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২ টাকা ৪৫ পয়সা। সে হিসাবে ফার্মগেট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ৩৫ টাকা, আর জসীমউদ্দীন পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার পথ ৪০ টাকায় যেতে পারবেন নগরবাসী। ই-টিকিটিং ব্যবস্থার কারণে ভাড়া নির্দিষ্ট করা থাকবে। বেশি ভাড়া নেয়ার সুযোগও থাকবে না। শুধু উড়ালসড়ককে কেন্দ্র করে এই ৮টি বাস চলবে।
যাত্রীরা এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্ত থেকে ওঠানামা করতে পারবেন। উত্তরার জসীমউদ্দীন, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন ও কাওলা থেকে দক্ষিণমুখী যাত্রীরা বাসে উঠতে পারবেন। আর ফার্মগেটে যাত্রী নামিয়ে বাসগুলো বিমানবন্দর অভিমুখী যাত্রী নেবে। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সংলগ্ন সংসদ ভবনের খেজুরবাগান এলাকার বঙ্গবন্ধু গোলচত্বর থেকে উত্তরামুখী যাত্রীরা বাসে উঠতে পারবেন। এছাড়া খামারবাড়ি ও বিজয় সরণি থেকেও যাত্রী নেবে বিআরটিসি বাস।
ফার্মগেটের খেজুর বাগানের কাছ থেকে বাসগুলো ছেড়ে উড়ালসড়ক দিয়ে উত্তরা জসীমউদ্দীন রোড হয়ে খেজুর বাগান এলাকায় ফিরে আসবে। এভাবে সকাল ৭টা থেকে সারা দিন চলবে বাসগুলো। রাত পর্যন্ত যতক্ষণ যাত্রী পাওয়া যাবে, ততক্ষণ চলবে। যাত্রীসংখ্যা বেশি থাকলে বাসের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ।
সরকারের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিতব্য এই উড়াল সড়কটির মূল অংশ ১৯.৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠা-নামার জন্য ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র্যাম্প (সংযোগ সড়ক) রয়েছে। র্যাম্পসহ উড়ালসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কিলোমিটার।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হয় এ সময়। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে শুরু করে মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার হয়ে কুতুবখালী গিয়ে শেষ হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি।