মার্চ ৮, ২০২৩, ০৭:৫৪ পিএম
পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনা যে ভবনটিতে ঘটেছে, সেই ভবনের মালিক দুই ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভবনের ভাড়াটিয়াসহ আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
বুধবার (৮ মার্চ) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে ভবনের মালিক দুই ভাই ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমানকে ডেকে নেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে ভবন নির্মাণে অনুমতি, ভাড়াটিয়া কতজন, কোথায় সেফটিক কিংবা রিজার্ভ ট্যাংক আছে, বেজমেন্ট এলাকায় ভাড়া দেওয়ার বৈধতা বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করছি।’
এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হলেও মালিকদের গ্রেপ্তার নয়, শুধু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডাকা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সাততলা এই বাণিজ্যিক ভবনটির মালিক রেজাউর রহমান অনেক আগেই মারা গেছেন। এ বিল্ডিংয়ে তিনি ‘ক্যাফে কুইন’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট খুলেছিলেন। পরবর্তীতে এটি ক্যাফে কুইন বিল্ডিং নামেই পরিচিতি পায়। রেজাউরের মৃত্যুর পর তার তিন ছেলে এই ভবনের মালিকানা পান। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ওয়াহিদুর এবং সবার ছোট মতিউর ঢাকায় থাকেন। তারাই ভবনের দেখাশোনা করেন। মেজো ছেলে মশিউর রহমান দেশের বাইরে থাকেন।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মো.জাফর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, রাজউক, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করছে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। তারা যদি প্রতিবেদন দেয় ভবনটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল, ভবন মালিকদের গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে যে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, সেই মামলাটিতে ধারা পরিবর্তন হবে।
এখানে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি অভিযোগ করলে তার অভিযোগটিও গ্রহণ করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান উপকমিশনার জাফর।
এর আগে, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের নর্থ-সাউথ রোডের ১৮০/১ হোল্ডিংয়ে সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সাততলা যে ভবনে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার তিনতলা পর্যন্ত পুরোটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে স্যানিটারি সামগ্রী আর গৃহস্থালী সামগ্রীর বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। বিস্ফোরণে দেয়াল ভেঙে ভেতরের জিনিসপত্র ছিটকে বাইরে বেরিয়ে আসে। ভবনের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের কয়েকটি ভবনও।
পাশের সাকি প্লাজা নামে পাঁচতলা ভবনের ওপরে চারটি ফ্লোরে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলিস্তান শাখা এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় কাঁচ ভেঙে ব্যাংকের অফিস কক্ষগুলোর পর্দা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
এই ঘটনায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিরা হলেন -মুনসুর, আলামিন, আবু বক্কর সিদ্দিক, নাজমুল হোসেন, রাহাত, ওবায়দুল হাসান, নুরুল ইসলাম, হৃদয়, মাইনুদ্দিন, মমিনুল, নদী, আকুতি বেগম, ইসমাইল হোসেন, ইছহাক মৃধা, সুমন, আব্দুল হাকিম ও মমিনুদ্দিন সুমন। এ ছাড়া আরও দুজনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।