ডিসেম্বর ২৮, ২০২২, ০২:৩২ পিএম
ঢাকা নগরবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেলকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়তে পারে-দুর্বার গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশে সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগেই সেটা উদ্বোধন করতে পেরেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল।
মেট্রোরেল শুরুর সময়ে রাজধানীতে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওই ঘটনার পর কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিলো। হলি আর্টিজানে জাপানের ৮জন সেখানে মৃত্যুবরণ করেন।’ এসময় তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়তে পারেন: মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কাটলেন প্রধানমন্ত্রী
জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “জাপানের প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা করার কারণে আবার মেট্রোরেলের কাজ শুরু হয়। সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেট্রোরেলে নামফলক তাদের নামে রাখবো। এছাড়া স্মৃতিস্মারক করেছি যাতে তাদের নাম থাকে।”
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের মাথা উচু হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মেট্রোরেলের মাধ্যমে আরেকটি অর্জনের পালে আরেকটি পালক যুক্ত করতে পারলাম।”
আরও পড়তে পারেন:প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মেট্রোরেলের গন্তব্যে যাত্রা
মেট্রোরেল চারটি মাইলফলক স্পর্শ করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এক. মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দুই. এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক রেল যুগে প্রবেশ করলো। তিন. মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রণ হবে। অর্থাৎ রিমোর্ট কন্ট্রোলে নিয়ন্ত্রণ হবে। এটি আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছি সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের প্রাথমিক পদক্ষেপ। চার. মেট্রোরেলে মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রেনের যুগে প্রবেশ করলো।”
রাজধানীর যানজট নিরসন করতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ৬টি মেট্রোরেল করার পরিকল্পনা নিয়েছি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে। এটি হলে যানজট যেমন কমবে, তেমনি অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে।
মেট্রোরেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ও বয়ষ্ক মানুষদের চলাচলে সুবিধা রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহিলা যাত্রীদের জন্য আলাদা কোচ, বাথরুম থাকবে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো ফিস লাগবে না।”
আরও পড়তে পারেন: মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে ৫০ টাকার স্মারক নোট উন্মোচন
মেট্রোরেল ব্যবস্থাপনায় নতুন কর্মসংস্থান হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “এতে নতুন ১২ হাজার প্রকৌশলী চাকরি হবে যাতে শুধু কর্মসংস্থান নয়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। এক সময়ে আমরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বিদেশ নির্ভরতা থাকবে না।”
মেট্রোরেল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “এটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব জনগণের। বিশ্বের সবচেয়ে সর্বশেষ প্রযুক্তির জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে এতে। এসব ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে।”
আরও পড়তে পারেন:মেট্রোরেলের সাপ্তাহিক বন্ধ যেদিন
দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশ উন্নয়নে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২১ থেকে ৪১ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা নিয়েছি। এখানেই থেমে থাকিনি, এই ব-দ্বীয় একশ বছর পর কেমন হবে সেই পরিকল্পনাও করেছি।”
দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ মাথাপিছু আয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার কারণে প্রবৃদ্ধি পিছিয়ে গেছে ঠিক, তবুও এখনো দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের তুলনায় আমরা অগ্রগামী।”