মুহসিন হলে ঝুঁকিপূর্ণ ৬৫টি কক্ষ চিহ্নিত: শিক্ষার্থী বরাদ্দ বন্ধের আবেদন

সালমান শাওন, ঢাবি প্রতিনিধি

মে ২, ২০২৫, ০৯:১১ পিএম

মুহসিন হলে ঝুঁকিপূর্ণ ৬৫টি কক্ষ চিহ্নিত: শিক্ষার্থী বরাদ্দ বন্ধের আবেদন

মহসিন হলের পলেস্তরা খসে পরে এক শিক্ষার্থী আহত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মোহাম্মদ ‍মহসিন হলের ছাদের পলেস্তরা খসে এক শিক্ষার্থী আহত হবার পর সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে ৬৫ টি রুম ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সাথে এক বছরের ছাত্র বরাদ্দ না করার আবেদন করেছেন সেই সাথে আলাদা হল কিংবা স্থানে শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলমান। 

গত ২৮ এপ্রিল ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার পর প্রশাসনের দিক থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সেদিন হলে অবস্থানরত এক শিক্ষার্থীর মাথার ওপর ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে তিনি আহত হন। এই ঘটনার পরপরই প্রশাসন ও প্রকৌশল দপ্তর জরুরি ভিত্তিতে হল পরিদর্শন ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।
 

দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভ-কে মুহসিন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, “আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫টি রুম চিহ্নিত করেছি যেগুলোর ছাদ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলোর পলেস্তারা সরিয়ে নতুন করে প্লাস্টারিংয়ের কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় ৫০টি রুমে ছোট-বড় সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে।”

প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, “এতদিনের অবহেলার কারণে অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। আমরা এবার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষগুলো ইঞ্জিনিয়াররা নিরীক্ষা করে দিচ্ছেন। যেগুলো অতিমাত্রায় বিপজ্জনক, সেগুলো সিলগালা করা হবে।”

নতুন ভবনের আশ্বাস, আপাতত টিনশেডে থাকবে শিক্ষার্থীরা

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যেসব শিক্ষার্থীর মাস্টার্স শেষ হয়েছে, তাদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খালি হওয়া এসব রুমে ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষের শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে স্থানান্তর করা হবে বলে জানান প্রাধ্যক্ষ।

এছাড়াও তিনি বলেন, “আমি নিজে এবং হাউস টিউটররা বেশ কিছু কক্ষ পরিদর্শন করেছি। আমরা চাইছি এই বছর থেকে মুহসিন হলে নতুন করে আর কোনো বরাদ্দ না দেওয়া হোক, যতক্ষণ না পর্যন্ত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হবে।”

প্রশ্ন ওঠে, ২০১৪ সালেই মুহসিন হলকে বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু এতদিন কেন কার্যকর সংস্কার হয়নি? এর উত্তরে ড. সিরাজুল ইসলাম জানান, “এর আগে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাজেট, অনুমোদন এবং তদারকির অভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব হয়েছে। তবে এবার আমরা দ্রুত বাজেট অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা সাময়িকভাবে কিছু টিনশেড নির্মাণের কথা ভাবছি, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষের শিক্ষার্থীরা সেখানে থাকতে পারেন। পাশাপাশি অন্যান্য হলে কিছু আসনের ব্যবস্থা করাও হচ্ছে। বাজেট পাস হলেই স্থায়ী নতুন ভবনের কাজ শুরু করব।”

এদিকে, সংস্কার কাজে একটি বড় বাধা হলো শিক্ষার্থীদের সবসময় রুমে না পাওয়া। ফলে কাজ চালাতে গিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। “তবে আমরা আন্তরিকভাবে এবং দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছি। ইঞ্জিনিয়ারিং টিম প্রতিদিনই কাজের অগ্রগতি দেখছে,” বলেন প্রাধ্যক্ষ।

 

Link copied!