ঢাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরবেন কি না, সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ২৩, ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম

ঢাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরবেন কি না, সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

আবাসন সমস্যা সমাধানসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ আলোচনার’ কথা জানিয়েছেন।

তারা বলছেন, আলোচনায় তারা ‘সন্তুষ্ট’। তবে এখনই ক্লাসে ফিরছেন না। অধ্যক্ষ কামরুল আলমের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকের পর তারা ক্লাসে ফেরার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।

আন্দোলন শুরুর দুদিন পর সোমবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ৭ সদস্যের দল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন অধ্যক্ষ কামরুল আলম। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা থাকলেও তার পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমানের সঙ্গে তারা বৈঠক করেন।

সেখান থেকে বের হয়ে দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তাদের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটা বিস্তারিত আলাপ প্রয়োজন ছিল সেটা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। তবে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা পরিষ্কার কোনো নির্দেশনা পাননি।

“বাজেট বাস্তবায়নের সময় এবং বিকল্প আবাসনসহ কিছু বিষয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। আমাদের বলেছেন, পরে জানানো হবে। আমরা সবকিছুর জন্য অপেক্ষা করছি। তবে আমরা এখনও ক্লিয়ার ইনস্ট্রাকশন পাইনি কীভাবে কি হচ্ছে। এ কারণে এখনও ক্লাসে ফিরছি না। কিন্তু আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয় আমরা চাই দ্রুত এটার সমাধান হোক। আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই।”

আলোচনায় ‘সন্তুষ্ট’ হওয়ার কথা তুলে ধরে নোমান বলেন, “আমরা যখন বৈঠক করছিলাম, সেই মুহূর্তে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এনাটমি বিভাগের দেয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা যে ক্লাসে ফিরব সেই পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। এনাটমি বিভাগ কোথায় শিফট করবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি, আমরা সেজন্য অপেক্ষা করছি।”  

বৈঠকে অংশ নেওয়া কে-৮১ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী দাবিগুলো মেনে নিয়েছেন। অন্য দুটি মেডিকেল কলেজে হল লাগবে না, সেই দুটি হল ঢাকা মেডিকেল কলেজে দেওয়া হবে।

“সামনের একনেকে অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে। আগামী জুলাই মাসে নবাগত ব্যাচের আবাসনের কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আগামীকাল প্রিন্সিপাল স্যারের সঙ্গে আমাদের মিটিং আছে। মিটিং ফলপ্রসূ হলে আমরা ক্লাসে ফিরে যাব।”

নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবিতে শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হল-

নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে।

ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে।

আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।

আন্দোলনের মধ্যেই শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। রোববারের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়। শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

রোববার সকালে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা বলেন, বৈঠকের আলোচনা থেকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো ‘আশ্বাস পাওয়া যায়নি’৷ এ কারণে হোস্টেল না ছেড়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এরপর শিক্ষার্থীদের পক্ষে কে-৭৯ ব্যাচের আব্দুল্লাহ আল নোমান আবাসন সংকট সমাধানে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ ও মন্ত্রণালয়ের দল এসে ঝুঁকিপূর্ণ হলের অবস্থা পরিদর্শন না করলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এ ঘোষণার পর সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা।

Link copied!