ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪, ০৩:২৫ পিএম
যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে এবং সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিভাগের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার জন্য ওই শিক্ষককে ছুটিতে পাঠানোর কথা জানিয়ে বিভাগকে চিঠিতে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পাশাপাশি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এর আগে গত রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন বিভাগের এক ছাত্রী।
যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে দিনভর বিক্ষোভ শুরু করেন। সে বিক্ষোভ গড়ায় সোমবারও। এদিন বেলা ১১টা থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের নবম তলায় সাংবাদিকতা বিভাগের বারান্দায় অবস্থান নেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।
একপর্যায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিভাগীয় কক্ষ তালাবদ্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টার দিকে বিভাগের শ্রেণিকক্ষগুলোও সিলগালা করে দেন তাঁরা।
এরপর শিক্ষার্থীরা মিছিল কর্মসূচিও পালন করেন। মিছিলটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, মধুর ক্যান্টিন ও মল চত্বর হয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে যায়। সে সময় উপাচার্য কার্যালয়ে না থাকায় মিছিল নিয়ে তাঁর বাসভবনের সামনে যান বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদসহ তিন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী প্রক্টরও সেখানে ছিলেন।
এ সময় বিভাগীয় চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তোমাদের দাবির বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ বিকেল চারটার মধ্যে সেই সিদ্ধান্তের চিঠি বিভাগে আসবে। উপাচার্যের বাসায় বিদেশি একটি প্রতিনিধিদল রয়েছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানের বিষয়।’
বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিভাগে গিয়ে অবস্থানের অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে বিভাগে চলে যান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পাঠানো চিঠি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পৌঁছায়।
নিজ কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের চিঠিটি পড়ে শোনান বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদ।চিঠিতে বলা হয়, ‘বিভাগের শিক্ষার্থীদের গতকাল রবিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে আপনাকে সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য আজ থেকে তিন মাসের জন্য ছুটি দেওয়া হলো। আপনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’