ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২, ০৯:২৩ এএম
টানা ৩১ দিন ছুটি শেষে আজ খুলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২১ জানুয়ারি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ করা হয়েছিল। প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১ মার্চ খোলার কথা থাকলেও পবিত্র শবে মেরাজের কারণে এসব প্রতিষ্ঠান খুলবে ২ মার্চ।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব শিক্ষার্থী করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে শুধু তারাই সশরীরে শ্রেণিকক্ষে অংশ নিতে পারবে। বিষয়টি শিক্ষকরা নিশ্চিত করবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও গেটে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে শ্রেণিকক্ষ, প্রবেশপথে কিছুতেই জটলা থাকতে পারবে না। করোনা সম্পর্কে সতর্ক করতে গেটে ও অন্যান্য জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রেণিকক্ষে দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আগে জেড আকৃতি বা তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে হবে।
মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে ইতঃপূর্বে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেগুলোই এখনও বাস্তবায়ন করতে হবে। ক্লাসরুটিনও আগের মতো থাকবে। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুদিন আসবে। এ ক্ষেত্রে শুধু এসএসসি ও এইচএসি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম থাকবে। তারা সপ্তাহে প্রতিদিনই আসবে।
মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলার জন্য ২০ দফা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। ইতোমধ্যে রোববার রাতে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে ওই আদেশের বেশিরভাগ নির্দেশনাই ইতঃপূর্বে ৫৪১ দিন ছুটি থাকার পরে ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে জারি করা হয়েছিল। আগের মতোই এ নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে কাজ করতে মাউশির সব আঞ্চলিক পরিচালক ও উপ-পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুনরায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ধুয়ে-মুছে ও পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানে এই প্রস্তুতি বেশি দেখা গেছে। পাশাপাশি শহরের বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে বলে জানিয়েছেন যুগান্তর প্রতিনিধিরা। মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয় বিশেষ করে উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন এ ক্ষেত্রে শতভাগ তদারকি করেনি বলে অভিযোগ এসেছে।
মাউশির নির্দেশনা
করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছিল। এবারও ২০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মাউশি।
নির্দেশনাগুলো হলো—যেসব শিক্ষার্থী করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, সশরীর শ্রেণি কার্যক্রমে শুধু তাদেরই অংশ নেওয়া; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা; পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন বা ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে পাঠদান এবং অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখা; শিক্ষার্থীদের ক্লাসের সূচি আগের নির্দেশনা মেনে প্রণয়ন করা; ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব ঢোকা ও বের হওয়ার পথ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা এবং প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।