অনেক বছর ধরে সাধনার পর পৃথিবীতে এই প্রথমবারের মতো মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করে চিকিৎসকেরা যুগান্তকারী সফলতা দেখিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একদল চিকিৎসক গত কয়েক দশক প্রচেষ্টা চালানোর পর মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হলেন। ব্রিটেনের গণমাধ্যম গার্ডিয়ান ও মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস’র এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউ ইয়র্ক সিটির এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথ হাসপাতালে মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজটি সম্পন্ন হয়। চিকিৎসকরা ‘ব্রেইন ডেথ’ এক নারীর শরীরের বাইরে এক জোড়া বড় রক্তনালীর সাথে শূকরের কিডনি সংযুক্ত করে দিয়েছিলেন। এরপর চিকিৎসকরা দু’দিন ধরে এই কিডনি প্রতিস্থাপন পর্যবেক্ষণ করেন। এতে দেখা যায়, কিডনির যেভাবে কাজ করার কথা ছিল, ঠিক সেভাবেই কাজ করছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, কিডনি গ্রহীতার শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা অস্বাভাবিক ছিল। তবে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
মার্কিন চিকিৎসক দল জানান, অনেকদিন ধরেই তারা প্রাণীর কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য শূকরের একটি জিন পাল্টে নতুন শূকরের জন্ম দিয়ে সেটি বড় করে তোলেন। এরপর সেই শূকরের কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন করলে স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে।
কিডনি প্রতিস্থাপনে চিকিৎসক দলের নেতৃত্বে থাকা ডা. রবার্ট মন্টগোমারি বলেন, শূকরের কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পর উদ্বিগ্ন ছিলাম। যে আগের মতো কিডনি মানবদেহ প্রত্যাখ্যান করে কিনা। কিন্তু পুরোপুরি স্বাভাবিকভাবে কিডনি কাজ করছে।
এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক চিকিৎসক অ্যান্ড্রু অ্যাডামস বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজটি সঠিক পথে এগোচ্ছে। এটি রোগী, গবেষক এবং নিয়ন্ত্রকদের আশ্বস্ত করবে।