করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করাসহ শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস দেশের সব বিভাগ ও জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেন।
করোনাভাইরাসর অতিমাত্রার সংক্রমণ রোধে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জরুরি করণীয় ও চলমান কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে প্রধানমস্ত্রীর কার্যালয় এই ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করে।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব করোনার উপসর্গ বা লক্ষণযুক্ত সব ব্যক্তিকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানান। প্রয়োজনে তাদের স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে আইসোলেশন নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন তিনি।
এ ছাড়াও মুখ্যসচিব দেশের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধিসহ করোনা রোগীদের শয্যা সংখ্যা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনাও দেন ।
করোনাভাইরাসের অতিমাত্রার সংক্রমণ প্রতিরোধে গত এপ্রিলে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও পরিস্থিতির উন্নিতি হয়নি। করোনায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার সাথে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা। গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা শহর এলাকায় বাড়লেও এবার গ্রাম এলাকায় এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, দেশের গ্রাম অঞ্চলের বেশিরভাগ লোকই করোনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেনা বলে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বুধবার (০৭ জুলাই) প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। পরিস্থিতি জটিল হওয়ার পর তারা চিকিৎসকের কাছে আসছে। তাদের অনেকেরই অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৫০ শতাংশের নিচে থাকছে। মস্তিস্কে অক্সিজেন স্যাচুরেশন বেশি সময় ধরে যদি কম থাকে তাহলে ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে যায়।‘ এমন সময় যারা চিকিৎসা নিতে আসছে তাদের সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই মহাপরিচালক বলেন, গ্রামের লোকেদের বিশ্বাস, তাদের করোনা হয় না। তারা সর্দি কাশিকে এক রকম উপেক্ষা করেন। কিন্তু তারা এমন সময় চিকিৎসা নিতে আসছে যখন তাদের সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে। তাদের বাঁচানোও কঠিন হচ্ছে ।’
দেশের সীমানবর্তী জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর খবর এসেছে গণমাধ্যমে। এছাড়া পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না অনেক হাসপাতালগুলোতে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অক্সিজেনের চাহিদা মেটানোর মতো সক্ষমতা এখনও আছে। গ্রাম অঞ্চলে এই অক্সিজেনের চাহিদা ও করোনা রোগীদের চিকিৎসায় শয্যা বাড়ানো গেলে এবং একই সঙ্গে টিকাদান কার্যক্রম জোরেসোরে শুরু করলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।