মাদক চোরাকারবারীদের হাতে পুলিশের এক কর্মকর্তা নিহতের ঘটনার পর লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে মাদক চক্রকে লক্ষ্য করে চালানো পুলিশের অভিযানে কমপক্ষে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পৃথক তিনটি প্রদেশে কয়েকদিন ধরে এই অভিযান চালানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, রিও ডি জেনেরিওতে সর্বশেষ অভিযানে নিহত হয়েছে ১০ জন। কমপ্লেক্সো দ্য পেনহা এলাকায় গুলিবর্ষণের শিকার হলে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ এবং এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়।
এর আগে সাও পাওলো প্রদেশে চালানো পাঁচ দিনের ‘অপারেশন শিল্ড’ অভিযানের সময় ১৬ জনের মৃত্যু হয়। ৫৮ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাহিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, গত শুক্রবার থেকে সেখানে ১৯ জন সন্দেহভাজনকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের সাওপাওলোর উপকূলীয় শহর গুয়ারুজাতে মাদক চোরাকারবারীদের হাতে নিহত হন পুলিশের এক কর্মকর্তা। এ ঘটনার পর পুরো সাওপাওলোতে তাণ্ডব চালায় পুলিশ। আর এরপরই তিনটি প্রদেশে মাদক চক্রকে লক্ষ্য করে পুলিশ অভিযানে নামে।
এদিকে গুয়ারুজায় অভিযানের সমালোচনা করে ব্রাজিলের বিচারমন্ত্রী ফ্লাভিও ডিনো বলেন, পুলিশের প্রতিক্রিয়া সংঘটিত কোনো অপরাধের সমান হতে পারে না।
এছাড়া সাও পাওলো প্রদেশের গভর্নর তারসিসিও ডি ফ্রেইতাস বলেন, সংঘর্ষের সময় নিহতদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এই অভিযানের নিন্দা করে রিও প্রদেশের আইনসভার সদস্য তালিরিয়া পেট্রোন বলেন, ‘অভিযানের নামে কোনো এলাকার জীবনযাত্রাকে এভাবে নরকে পরিণত করার জন্য রাষ্ট্রের কাছে কোনো ব্যাখ্যা নেই’।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, গুয়ারুজায় চালানো পুলিশের অভিযানে আসলে ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার স্পষ্ট লক্ষণ’ রয়েছে।
যদিও বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযানের সময় আশপাশের স্কুলগুলো বন্ধ ছিল এবং প্রায় ৩ হাজার ২২০ জন শিক্ষার্থীকে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার উদ্যোগে বাড়ি পরিদর্শনের কাজও এদিন নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে স্থগিত করা হয়।
ব্রাজিলে সশস্ত্র সহিংসতার তথ্য অনুসন্ধান করে ইনস্টিটিউট ফোগো ক্রুজাডো নামে একটি সংস্থা পুলিশের এসব অভিযানকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।