আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনেকেই দেশ থেকে পালিয়েছেন। তাদেরই একজন ইশতিয়াক আলী খান পান্না। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যার শিকার হয়েন তিনি। ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে তার লাশ উদ্ধারের পর গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ভারতীয় পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তির বরাতে এনডিটিভি জানায়, ইশতিয়াক আলী খান পান্নার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া যে স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেটি বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে বেশি দূরে নয় বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়।
মেঘালয় রাজ্য পুলিশ জানায়, গত ২৬ আগস্ট পূর্ব জৈন্তার পাহাড়ি অঞ্চলের ভোই গ্রাম থেকে পান্নার পচা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। গ্রামটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পান্নার লাশের সঙ্গে বাংলাদেশের পাসপোর্টও পাওয়া গেছে।
জানানো হয়েছে, পান্নার মরদেহ ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হচ্ছে। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে নাকি তার হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে তার কপালেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পান্না। ওই সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি এ কে এম এনামুল হক শামীম পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একাধিকবার এমপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের উপমন্ত্রী হলেও পান্না বরাবরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বাইরে ছিলেন। তবে ২০১২ সালের সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ও পরে বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগপর্যন্ত ছিলেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন পান্না।
এর আগে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান পান্না। অবশ্য পরে ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচনের কারণে তাকে সরে যেতে হয়। পেশাগত জীবনে বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা।