ফলমূল আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এতে থাকা প্রাকৃতিক আঁশ, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কার্যক্রম সঠিক রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
তবে সব ফল পেটের জন্য সমান উপকারী নয়—অনেক ক্ষেত্রে কিছু ফল হজমে সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক বা অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্যে পেঁপে
যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাঁদের জন্য সকালে খালি পেটে পাকাপেঁপে খাওয়া হতে পারে কার্যকর সমাধান। এতে থাকা প্রাকৃতিক আঁশ ও পানির পরিমাণ হজমক্রিয়াকে সহায়তা করে এবং মলত্যাগ সহজ করে।
অম্বলে কলা
অম্বলের সমস্যা থাকলে পাকাকলা হতে পারে ভালো পছন্দ। কম অ্যাসিডযুক্ত এই ফল পেটে সুরক্ষা দেয়। তবে কলা যেন ভালোভাবে পাকা হয়, কারণ কাঁচা কলায় থাকা রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ অনেক সময় হজমে বিলম্ব ঘটাতে পারে কিংবা ফোলাভাব তৈরি করতে পারে।
ফোলাভাব কমাতে আনারস
প্রোটিনজাত খাবার বা ভারী খাবার খাওয়ার পর ফোলাভাব হলে আনারস খাওয়া যেতে পারে। এতে থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে এবং গ্যাস কমায়। তবে আনারস নিজে কিছুটা অ্যাসিডিক, তাই যাঁদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়াই ভালো।
প্রোটিনের উৎস হিসেবে পেয়ারা
ফলের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি প্রোটিন পাওয়া যায় পেয়ারা থেকে। প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ২.৫ থেকে ৩ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি এটি আঁশ, ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেরও ভালো উৎস, যা হজম ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যে ভূমিকা রাখে।
যা এড়িয়ে চলবেন
কিছু জনপ্রিয় ফল হজমের জন্য ততটা সহায়ক নয়। যেমন—কমলা, মাল্টা বা বাতাবি লেবুর মতো সাইট্রাস ফল।
এ ধরনের ফল শরীর হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করলেও এতে শক্তিশালী হজমকারী এনজাইম থাকে না। তাছাড়া বেশি পরিমাণে বা খাবারের পর এগুলো খেলে অনেকের ক্ষেত্রে পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে।
ফল স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও কোন ফল কীভাবে এবং কখন খাওয়া উচিত—তা জানা জরুরি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে এসব ফল সহজলভ্য ও বহুল ব্যবহৃত, সেখানে সচেতনতা থাকলে পেটের নানা সাধারণ সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব।