জুলাই ১২, ২০২৫, ১২:৪৪ পিএম
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) নির্মমভাবে হত্যার মামলাটি দ্রুতবিচার আইন, ২০০২-এর আওতায় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
শনিবার সকালে দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আসিফ নজরুল এ কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে মামলাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে।
বুধবার দিনদুপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) সংলগ্ন ব্যস্ত সড়কে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় দেখা যায়, লাল চাঁদকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে এনে ইট-পাথর দিয়ে পিটিয়ে মাথা ও শরীর থেঁতলে হত্যা করা হয়। হামলার সময় তাকে বিবস্ত্র করা হয়, এমনকি কয়েকজন হামলাকারী তার শরীরের ওপর লাফিয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটিকে চরম নৃশংসতা হিসেবে বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার কোতোয়ালি থানায় নিহত লাল চাঁদের বোন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫–২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হত্যার পেছনে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল মূল কারণ। লাল চাঁদ একসময় জাতীয়তাবাদী যুবদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলেও জানা গেছে, তবে তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এখনো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান ওরফে মহিন, যিনি স্থানীয়ভাবে যুবদল নেতা হিসেবে পরিচিত, এবং তারেক রহমান ওরফে রবিনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকি দুজনের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনার পর রাজনৈতিক অঙ্গসংগঠনগুলো শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। যুবদল তাদের দুই নেতাকে—একজন সাবেক কেন্দ্রীয় জলবায়ুবিষয়ক সহসম্পাদক এবং ঢাকা দক্ষিণ মহানগর ইউনিটের এক যুগ্ম আহ্বায়ক—বহিষ্কার করেছে।
ছাত্রদল চকবাজার থানা ইউনিটের এক সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক দল তাদের এক সদস্যকে বহিষ্কার করেছে। এসব সংগঠন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও দাবি করেছে।
ঘটনার বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে দেশে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং দ্রুত বিচারের দাবি জোরালো হয়েছে।