জুলাই ১২, ২০২৫, ০৬:২০ পিএম
২০২৪ সালের জুলাই মাসের প্রতিবাদে স্লোগান দিচ্ছেন অভিনেতা আজমেরী হক বাঁধন।
রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে একাধিক আবেগঘন পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার ভিডিও ও ছবি দেখে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
বাঁধন লিখেছেন, “আমার বাবা-মা আমার নিরাপত্তা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। আর আমার মেয়ে—সে কেবল আমাকে পেয়েছে, আমি-ই তার পুরো পৃথিবী। কিন্তু এমন দেশে আমি তাকে কীভাবে নিরাপদ রাখি? আমরা আসলে কেমন একটা জায়গায় বাস করছি? এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই, মন শান্ত করারও সুযোগ নেই।”
প্রকাশ্যে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সম্পর্কে তিনি বলেন, “একজন মানুষকে দিনের আলোয় নির্মমভাবে পিটিয়ে মারা হলো, আর আশপাশের লোকজন দাঁড়িয়ে তা দেখল—কেউ কিছু করল না! এটা কিভাবে সম্ভব? এটাই সবচেয়ে ভয়ংকর। আমরা কি সত্যিই নরকে বাস করছি না?”
সরকারি নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, “আমরা ভেবেছিলাম সময় বদলাবে। স্বপ্ন দেখেছিলাম নিরাপদ, সুন্দর ভবিষ্যতের। নতুন সরকার এলো—আমরা বিশ্বাস করেছিলাম। আমরা অপেক্ষা করেছি। কিন্তু এখন যা দেখছি, তা ভয়াবহ। যদি নির্বাচিত সরকারও কোনো পরিবর্তন আনতে না পারে, কোনো ভবিষ্যৎ দেখাতে না পারে, তাহলে এর মানে কী?”
“আমি ভীত, আমি ক্ষুব্ধ। কিন্তু সবচেয়ে বেশি আমি ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছি,”—যোগ করেন বাঁধন।
নিজের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “এই দেশে আমি কি আদৌ নিরাপদ? আমি কি নিজের মনের কথা বলার অধিকার রাখি? নাকি শুধু সত্য বলার অপরাধেই আমি হবো পরবর্তী শিকার?”
উল্লেখ্য, পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে মাথা ও শরীর থেঁতলে হত্যা করে একদল দুর্বৃত্ত। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্রও করা হয়।
তদন্ত এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত লাল চাঁদ একসময় বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মামলার প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু নেতাকর্মী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাঁধনের পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তাঁর সঙ্গে একমত হয়ে দেশজুড়ে বিচারহীনতা ও নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।