মে ৮, ২০২৫, ০১:৩২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল ফিলিস্তিন সমর্থক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গ্রন্থাগারের ভেতরে টেবিলে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ঢোল বাজাচ্ছিলেন তারা।
ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থী গোষ্ঠী ‘কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্থেইড ডাইভেস্ট’ বলছে, ইসরায়েলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসূত্রের প্রতিবাদে তারা গ্রন্থাগার দখলে নেন।
তারা অনলাইন পাবলিশিং প্লাটফর্ম সাবস্ট্যাকে লিখেছেন, “১০০ জনের বেশি মানুষ বাটলার লাইব্রেরিতে জড়ো হয়ে নাম বদলে ‘বাসেল আল-আরাজ পপুলার ইউনিভার্সিটি’ করেছে।”
আল জাজিরা লিখেছে, এই নামকরণ করা হয় ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী ও লেখক বাসেল আল-আরাজের নামে, যাকে ২০১৭ সালে ইসরায়েলি বাহিনী হত্যা করে।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্থেইড ডাইভেস্ট লিখেছে, “যতদিন সাম্রাজ্যবাদী সহিংসতা থেকে কলাম্বিয়া অর্থায়ন ও লাভবান হতে থাকবে, ততদিন কলাম্বিয়ার মুনাফা ও বৈধতা প্রশ্নে জনতা যে বাধা হয়ে দাঁড়াবে তা এই জমায়েত প্রমাণ করে।
“দমন-পীড়নই প্রতিরোধের জন্ম দেয়- কলাম্বিয়া যদি দমন-পীড়ন বাড়ায়, জনতা এই ক্যাম্পাসের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটাতে থাকবে।”
এই বিক্ষোভকে ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’ মন্তব্য করে এর নিন্দা জানিয়েছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ক্লেয়ার শিপম্যান।
তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীরা পরিচয় জানাতে ও ভবন ত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা পুলিশ ডাকেন।
“আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি সহ্য করা হবে না এবং এটি আমাদের নিয়ম ও নীতিমালা লঙ্ঘনের শামিল; বিশেষ করে যখন আমাদের শিক্ষার্থীরা ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা ও প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন এমন কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।”
শিপম্যান বলেন, “কলম্বিয়া আমাদের ক্যাম্পাসে সহিংসতা, ইহুদিবিদ্বেষ এবং সব ধরনের ঘৃণা ও বৈষম্যের তীব্র নিন্দা জানায়, যার কিছু আমরা আজ দেখেছি।”
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ক্লেয়ার শিপম্যান বলেন, লোকজন জোর করে ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত হন।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। নির্দেশনা অমান্যকারী ‘একাধিক ব্যক্তিকে’ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের রেডিও স্টেশন উইনস জানিয়েছে, প্রায় ৮০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আল জাজিরা লিখেছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে গতবছর যখন যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক ক্যাম্পাসে ছাত্র বিক্ষোভ হয়, তখন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপক বিক্ষোভের সাক্ষী হয়েছিল।